অর্থনীতিতে গণতন্ত্রায়ণ করা না গেলে অলিগার্ক বারবার ফিরে আসবে : খসরু

দেশে ১৫ বছর পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতির চর্চা চলেছে

| বুধবার , ৮ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:১০ পূর্বাহ্ণ

দেশে গত ১৫ বছর পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতির চর্চা চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্যবসায়ীদের একটি সংগঠনের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ ব্যবস্থায় কিছু লোক, যারা সরকারের আশীর্বাদ পাবে, তারাই ব্যবসা করতে পারবে, তারাই ব্যাংকের মালিক হবে, স্টক মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করবে, বড় বড় ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করবে।

ঢাকার একটি হোটেলে ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্ট অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউকেবিসিসিআই) নামের একটি বাণিজ্যিক সংগঠনের ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। আমীর খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হরণ করতে গিয়ে অন্যান্য অধিকারও হরণ করে। তার পরিণতি কী হয়েছে, সেটা এখন সবারই জানা। এখানে টেলিকম খাতে যেটা হয়েছে, তা জানলে আঁতকে উঠবেন। টাওয়ার, ভয়েস, ডেটা সবকিছু একটি কোম্পানিই নিয়ন্ত্রণ করছে। সংসদ কিংবা কেবিনেটে না গিয়ে তারা নিজেদের জন্য নিয়ম বানিয়ে নিয়েছিল। তিনি বলেন, অলিগার্ক কাকে বলে, সেটা বাংলাদেশেই ছিল। আগে যখন আমি শব্দটা ব্যবহার করতাম অনেকে আপত্তি তুলত। এখন বিশ্বব্যাংকের লোকজনও এই শব্দ ব্যবহার করে। এজন্য আমি অর্থনীতিতে গণতন্ত্রের কথা বলছি। যখন একটা দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, তখন টিকে থাকার জন্য বাকি অধিকারগুলো কেড়ে নিতে হয়। এজন্য সংবাদপত্র, গণমাধ্যম, অর্থনীতি সব অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। অর্থনীতিতে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিতের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, অর্থনীতিতে গণতন্ত্রায়ণ করা না গেলে এসব অলিগার্ক বার বার ফিরে আসবে। খবর বিডিনিউজের।

বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে যে পরিবর্তন এসেছে, সেটা রাজনীতিবিদদের অনুধাবন করতে হবে। রাজনীতিবিদদের জেগে উঠতে হবে এবং পরিস্থিতির অনুধাবন করতে হবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে গণতন্ত্রের মূল্যবোধের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া যাবে না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, কোন পার্টি, কার ছেলে, কার মেয়ে, কার বউ আসবে এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আপনি যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হন, তাহলে আপনি কার ছেলেমেয়ে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটাই একমাত্র নিয়ম, এখানে দ্বিতীয় কোনো প্রক্রিয়া নেই।

ইউকেবিসিসিআই এর সভাপতি ইকবাল আহমেদ বলেন, আমরা খুবই আশাবাদী। ভারত যুক্তরাজ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করে, চীন করে ৬০ বিলিয়ন আর বাংলাদেশ করে মাত্র সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার। এখানেই ব্যবধান স্পষ্ট। তাহলে আমাদের অনেক বড় সুযোগ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা ৫০০ মিলিয়ন বিনিয়োগের কথা বলতেও লজ্জা পাচ্ছি। আমাদের ৫ বিলিয়ন রপ্তানির বিষয়ে কথা বলা উচিৎ ছিল। হাসপাতাল সেবা, উচ্চমূল্যের পোশাক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এসব বিষয়ে বিনিয়োগ হতে পারে।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের হাউজ অব কমনসের এমপি রূপা হক বলেন, আমি দেখতে পাচ্ছি দেশ এগিয়ে চলছে। ব্রিটেনের জামাকাপড়ে মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা দেখে আমরা খুবই গর্বিত হই। কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, আমরা একটি মাত্র খাতের ওপর নির্ভর করে পড়ে থাকতে পারি না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, হিমায়িত চিংড়ি খাতে আরও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বড় বড় ব্রান্ড নৈতিক দামে পণ্য কেনার চেষ্টা করে। আমরা নৈতিক মূল্য চাই। জাপান ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এফটিএ নিয়ে নেগোসিয়েশন করছেন এফবিসিসিআই প্রশাসক হাফিজুর রহমান। আমরা বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করেছি ইউকে বিজনেস প্রতিনিধিদের সঙ্গে। শিক্ষা, মৎস্য, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে বিনিয়োগের সুযোগের কথা বলেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬