অর্কিডের জন্য ভালোবাসা

৫ বছর ধরে সংগ্রহ, সাথোয়াইর সংগ্রহে আছে ৫৫ প্রজাতি

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | রবিবার , ৫ জুন, ২০২২ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়িতে বিলুপ্ত ও বুনো জাতের অর্কিডের সংরক্ষণাগার গড়ে তুলেছেন অর্কিডপ্রেমী তরুণ সাথোয়াই মারমা। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড় থেকে বিপন্ন প্রজাতির অর্কিডের জাত সংগ্রহ করেছেন তিনি। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয়, পাহাড়ের হারিয়ে যাওয়া অর্কিড রক্ষায় এমন উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। প্রায় ৫ বছর ধরে সংগ্রহ করা বিপন্ন ও দেশীয় প্রজাতির অর্কিড দিয়ে সংরক্ষণশালা গড়ে তুলেছেন তিনি। সরেজমিনে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের রাজ্যমনি পাড়ায় সাথোয়াই মারমার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার সংরক্ষণশালায় ডেন্ডোবিয়াম লিন্ডলে, ডেন্ডোবিয়াম পিয়েরাড্ডি, সিলোজিনি, এনসেপ, ফঙটেইল, ট্রান্সপারেন্স, একেম্পে রিগিদা, এরিয়া টেমেনটোসাসহ প্রায় ৫৫ প্রজাতির বিপন্ন অর্কিড রয়েছে। কোনো ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই পাহাড়ের বিভিন্ন বন ঘুরে বিরল জাতের এসব অর্কিড সংগ্রহ করেছেন তিনি। বাহারি রঙের অর্কিড, টবের পরিবর্তে শোভা পাচ্ছে তেঁতুল, আম, জারুল, সোনালু ও কাঁঠালগাছে। বন থেকে সংগ্রহ করা বেশিরভাগ অর্কিডকে প্রাকৃতিকভাবে সৃজিত করা হয়েছে। দুষ্প্রাপ্য ও বিপন্ন অর্কিড রক্ষায় গড়ে তুলেছেন হিল অর্কিড সোসাইটি।

সাথোয়াই মারমা জানান, একসময় পাহাড়ের বড় বড় গাছে অর্কিড দেখা গেলেও আজ তা বিলুপ্ত। আমাদের দেশীয় অর্কিড যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য পাঁচ বছর ধরে পাহাড়ের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা জাতের অর্কিড সংগ্রহ করা হয়েছে। অর্কিডগুলোকে বন্য বা প্রাকৃতিক পরিবেশ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন গাছে সংগ্রহ করা অর্কিড সৃজন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একসময় বাংলাদেশে প্রায় ২০০ প্রজাতির মতো নেটিভ অর্কিড ছিল। অর্কিডের বাল্ব দিয়ে আদিবাসী বৈদ্যরা বিভিন্ন ঔষধ তৈরি করতেন। নির্বিচারে বন ধ্বংস ও অর্কিড পাচারের কারণে বর্তমানে অর্কিড বিলুপ্তির পথে।

অর্কিড দেখতে আসা প্রলয় বাপ্পী ও আক্তার হোসেন জানান, দুষ্প্রাপ্য অর্কিড রক্ষায় এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

প্ল্যানটেশন ফর ন্যাচারের প্রতিষ্ঠাতা সবুজ চাকমা জানান, রঙে ও বৈচিত্র্যে অর্কিড আকর্ষণীয়। ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অর্কিড ফোটে। পরাশ্রয়ী শ্রেণীর এসব অর্কিড সাধারণত বনের বট ও জারুলসহ বিভিন্ন বড় বড় বৃক্ষে দেখা যেত। পাহাড়ের প্রাকৃতিক বন ধ্বংসের কারণে ক্রমশ বিলুপ্ত হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্যপ্রাণী থাকবে উন্মুক্ত, দর্শনার্থী সুরক্ষিত
পরবর্তী নিবন্ধপদ্মা সেতু উদ্বোধনে খালেদাকেও দাওয়াত দিতে চান কাদের