রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার মামলায় পাঁচবার রায় পেছানোর পর পুনঃতদন্তের আদেশ দিয়েছে আদালত। ঢাকার দ্বাদশ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে গতকাল বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় হওয়ার কথা ছিল। খবর বিডিনিউজের।
এ আদালতের পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) রাহিমুল করিম আকন্দ হিমেল বেলা ১১টায় জানিয়েছিলেন, রায়ের তারিখ আবারো পেছানো হচ্ছে। পরে দুপুর ১টার দিকে তিনি বলেন, রায়ের পঞ্চম তারিখে এসে বিচারক মামলাটি পুনঃতদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। ‘মামলাটি কেন পুনঃতদন্ত করতে বলা হয়েছে, সেটি জানা যাবে পূর্ণাঙ্গ আদেশ লেখার পর।’ বাদী ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২৭ নভেম্বর এ মামলা রায়ের পর্যায়ে আসে।
প্রথমে রায়ের জন্য ২১ জানুয়ারি তারিখ দিয়েছিল আদালত। ওইদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি ঠিক করা হয়। কিন্তু ওই দিনও একই কারণে তা পিছিয়ে ৩ মার্চ ঠিক করা হয়। পরের দফায় রায় পিছিয়ে তারিখ পড়ে ৯ এপ্রিল। তারপর ৩ জুন নতুন তারিখ রাখা হয়েছিল। এরপর ২৫ জুলাই রায় হওয়ার কথা থাকলেও বিচারক মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিলেন। মামলার দুই আসামি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তখনকার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস এবং শাখা প্রধান জিনাত আক্তার জামিনে রয়েছেন। এদিন তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হলে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারার এ মামলার তাদের সর্বোচ্চ দশ বছর কারাদণ্ড, সঙ্গে অর্থদণ্ড হতে পারে।
কী ঘটেছিল : ২০১৮ সালে ৩ ডিসেম্বর শান্তিনগরের বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী (১৫)। তার আগের দিন পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে তাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকল নিয়ে টেবিলে রেখে লিখছিল। অন্যদিকে স্বজনদের দাবি, নকল করেনি অরিত্রী। এরপর অরিত্রীর বাবা–মাকে ডেকে নেওয়া হয় স্কুলে। তখন অরিত্রীর সামনে তার বাবা–মাকে অপমান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিনই আত্মহত্যা করেন অরিত্রী। ৪ ডিসেম্বর তার বাবা দিলীপ অধিকারী আত্মহননে প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওই মামলায় অরিত্রীর শিক্ষকদের পুলিশ গ্রেপ্তারও করলেও পরে তারা জামিন পান।