অম্বিকা চক্রবর্তী : সূর্য সেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী

| বুধবার , ৬ মার্চ, ২০২৪ at ৮:১৯ পূর্বাহ্ণ

অম্বিকা চক্রবর্তী (১৮৯২১৯৬২)। ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব। অম্বিকা চক্রবর্তীর জন্ম চট্টগ্রামে। তার পিতার নাম নন্দকুমার চক্রবর্তী। তিনি ছিলেন অসম সাহসী এক দেশপ্রেমিক তরুণ। সময়টা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের। একদিকে সমরাঙ্গণে ব্রিটিশ সেনা, অনদিকে ভারতে তৈরি হচ্ছে বিপ্লবের মহামঞ্চ। এই মঞ্চে যোগ দেন অম্বিকা চক্রবর্তীও। ১৯১৬এর শেষদিকে প্রথমবার গ্রেফতার হন। ছাড়াও পেয়ে যান দুই বছর পর। তার সাথে পরিচয় হয় পাশের গ্রামের অঙ্কের শিক্ষক সূর্য সেনের। সেই থেকে শুরু সূর্য সেন আর অম্বিকা চক্রবর্তীর একসঙ্গে পথ চলা। ১৯১৮এর শেষদিকে তাঁরা দুজন চট্টগ্রামে তৈরি করেন একটি গোপন বিপ্লবী দল। সঙ্গে যোগ দেন চারুবিকাশ দত্ত, নগেন্দ্রনাথ সেন, অনুরূপ সেনরা। চট্টগ্রামেই একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে ওখানে গোপন আখড়া তৈরি করেন অম্বিকা। সূর্য সেনও সঙ্গে ছিলেন। আস্তে আস্তে সদস্যও বাড়তে থাকে দলের। যোগ দেন গণেশ ঘোষ, অনন্ত সিংহরা। তৈরি হতে থাকে ব্রিটিশদের ত্রাস জাগানো একটি সংগঠন। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চূড়ান্ত পর্যায়ের চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখলের দিন তার নেতৃত্বে একটি ক্ষুদ্র দল শহরের টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা ধ্বংস করে। আত্মরক্ষার জন্য পাহাড় অঞ্চলে চারদিন অভুক্ত অবস্থায় থাকার পর ২২ এপ্রিল তারিখে পুলিশ ও মিলিটারির এক বিরাট বাহিনীর সংগে জালালাবাদের যুদ্ধে গুরুতরভাবে আহত হন। সঙ্গীরা তাকে মৃত মনে করে ত্যাগ করে চলে যায়। গভীর রাতে জ্ঞান ফিরে আসে ও পাহাড় ত্যাগ করে একটি নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। কয়েক মাস পরে ধরা পড়েন। বিচারে প্রথমে প্রাণদণ্ড ও পরে আপিলে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। ১৯৪৬ সালে মুক্তি পাবার পর কমিউনিস্ট আন্দোলনে যুক্ত হন। দেশবিভাগের পর উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের চেষ্টায় একটি সমবায় গঠন করেন। ভারতের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বঙ্গীয় সাধারণ সভার সদস্য হন। ১৯৪৮ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি বেআইনি ঘোষিত হলে আত্মগোপন করেন। ১৯৪৯৫১ সালে পুনরায় কারাবাস করেন। অম্বিকা চক্রবর্তী ১৯৬২ সালের ৬ই মার্চ কলকাতার রাজপথে দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধপ্রবাহ