অভ্যুত্থানের শহীদরা জাতীয় বীর

জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা

| বৃহস্পতিবার , ৭ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের ইতিহাসের গতিপথ বদলে দেওয়া চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের জাতীয় বীর, শহীদদের পরিবার, আহত যোদ্ধা ও আন্দোলনকারী ছাত্রজনতাকে আইনি সুরক্ষার অঙ্গীকার রেখে জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হলো।

এক বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এই দিনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে গত মঙ্গলবার বিকাল ৫টার কিছু সময় পর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের পাশে নিয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন প্রধান উপদেষ্টা। ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদদের জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা করে শহীদদের পরিবার, আহত যোদ্ধা এবং আন্দোলনকারী ছাত্রজনতাকে প্রয়োজনীয় সকল আইনি সুরক্ষা দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে।

জুলাই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকারও রয়েছে এতে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে যে, ছাত্রগণঅভ্যুত্থান ২০২৪এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এ ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকবে। খবর বিডিনিউজের।

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে এই ঘটনার ঐতিহাসিক দলিল বা ঘোষণাপত্র পড়ে শোনাতে এদিন বিকাল ৫টায় প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার মঞ্চে উপস্থিত হন। জাতীয় সঙ্গীতে শুরু হয় জুলাই ঘোষণাপত্রের অনুষ্ঠান। পরে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের সদস্য সাবরিনা আফরোজ সেমন্তী।

হিসাব করলে ১০৩৬ শব্দের ২৮ দফা জুলাই ঘোষণাপত্রে পাকিস্তানের ২৩ বছরের শাসনকালের বঞ্চনা, স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে অনেক আশাভঙ্গের ঘটনা, ৯০ এর গণঅভ্যুত্থান, ২০০৭ সালের ১/১১ এর ঘটনা এবং আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে নানা রকম সংবিধানবিরোধী ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড তুলে আনা হয়েছে।

জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করার সময় মঞ্চে প্রধান উপদেষ্টার পাশে ছিলেনবিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, জাতীয় নাগরিক পার্টিএনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর), হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান মঞ্জু, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম, সালাহউদ্দিন আহমদ, জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উল্লাহ কায়সার, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদের, জেএসডির সহ সভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের চিঠি
পরবর্তী নিবন্ধ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে নির্বাচন