অভিযোগ অনেক, জনবল সংকটে অভিযান কম

বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস আজ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৫ মার্চ, ২০২৩ at ৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের তদারকির দায়িত্বে আছেন মাত্র তিনজন। আর চট্টগ্রাম জেলায় আছেন একজন। প্রতিদিন অনেক অভিযোগ আসে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে অভিযানের সংখ্যা কম।

এমন পরিস্থিতির মাঝে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ জ্বালানি, ভোক্তাবান্ধব পৃথিবী’।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ আজাদীকে বলেন, ভোক্তাদের আসলে অভিযোগ অনেক। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। অভিযান জোরদার করার মতো পর্যাপ্ত জনবল আমাদের নেই। আমাদের বিভাগীয় কার্যালয়ে একজন উপপরিচালক ও দুজন সহকারী পরিচালক দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। জনবল বাড়ানো গেলে পরিশেষে ভোক্তারাই উপকৃত হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের ভোক্তারা সব সময় কতিপয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে অসহায়। খাদ্যপণ্যে মেশানো হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক। এসব খাবার খেয়ে কিডনি বিকল, হার্ট অ্যাটাক, ক্যান্সারসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন ভোক্তারা। এছাড়া আমাদের দেশে খাদ্যে ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার নজির নেই। ফলে তারা জরিমানার অংক গুণে ফের একই কাজ করতে থাকে। মূলত এসব পণ্যের সহজলভ্যতা ও প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাব এর জন্য দায়ী। ভেজালের সঙ্গে জড়িত লোকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্যকে ভেজালমুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি জনগণকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। খাদ্যে ভেজাল মেশানোর অপরাধে ভারত যাবজ্জীবন সাজা দিয়ে থাকে। এছাড়া চীনে মৃত্যুদণ্ড, পাকিস্তানে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

অপরদিকে জিনিসপত্র কিনতে গিয়েও ঠকছেন ভোক্তারা। সিন্ডিকেট করে রাতারাতি জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে। যে পণ্যের দাম হওয়ার কথা এক টাকা, সেটি ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে পাঁচ টাকা দিয়ে। এখন অনলাইন কেনাকাটাও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে সেখানেও ঠকছেন ভোক্তারা। এক পণ্য অর্ডার করে পাচ্ছেন আরেক পণ্য। এসব ক্ষেত্রে অভিযোগ করেও কোনো বিচার পান না ভুক্তভোগীরা। জানা গেছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে ১৯৬২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি কংগ্রেসে ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে বক্তৃতা দেন। ভোক্তার চারটি অধিকার সম্বন্ধে তিনি আলোকপাত করেন। এগুলো হলো : নিরাপত্তার অধিকার, তথ্য প্রাপ্তির অধিকার, পছন্দের অধিকার এবং অভিযোগ প্রদানের অধিকার। ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘ কেনেডি বর্ণিত চারটি মৌলিক অধিকারকে বিস্তৃত করে আরো আটটি মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করে। কেনেডির ভাষণের দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে দিনটিকে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস হিসাবে বৈশ্বিকভাবে পালন করা হয়।

এছাড়া সব জেলায় জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে রয়েছে ১১ সদস্যের জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটি। উপজেলা চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে আছে ১৮ সদস্যের উপজেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটি। সব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে ২০ সদস্যের ইউনিয়ন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটিও কাজ করছে। এর বাইরে বেসরকারি উদ্যোগে আগে থেকেই কাজ করে আসছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ক্যাব)

পূর্ববর্তী নিবন্ধওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয়ে জোর
পরবর্তী নিবন্ধউন্নয়ন অংশীদারদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান অব্যাহত রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর