গরীব মানুষের প্রোটিনের একমাত্র উৎস ডিমের বাজার এখনো লাগামহীন। প্রশাসনের অভিযানের পরেও থামছে না ডিম নিয়ে কারসাজি। দীর্ঘদিন ধরে ডিমের ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় ঘুরপাক খাচ্ছে। পাইকারী ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে বেশিরভাগ ডিমের সরবরাহ হয় টাঙ্গাইল থেকে। সরবরাহ টাঙ্গাইল থেকে হলেও বাজারের নিয়ন্ত্রণ করে ঢাকার তেঁজগাও সমিতি।
তারা সারা দেশের ব্যবসায়ীদের কত টাকা দরে ডিম বিক্রি করবেন, সেটি জানিয়ে দেন। সেই মতে বাজার নিয়ন্ত্রিত হয়। বর্তমানে পাইকারীতে ১০০ পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ছে ১০ টাকা ৮০ পয়সা। এদিকে খুচরা বাজারে গতকাল সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৫০ টাকায়। প্রতি পিসের দাম পড়ছে ১২ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ পাইকারীর তুলনায় প্রতি পিস ডিম ১ টাকা ৭০ পয়সা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তারা বলছেন, ডিমের বাজারে এখন অরাজকতা চলছে। পাইকারী হিসেবে প্রতি ডজন ডিমের দাম পড়ছে ১২৯ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে ডজনে ২১ টাকা টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে। মুনাফা করারও তো একটা সীমা আছে।
জানা গেছে, মোবাইলে এসএমএস ও ফেসবুক গ্রুপ পেজের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয় দেশের ডিমের বাজার। পাইকারী ব্যবসায়ীদের সেই দাম অনুসরণ করে খুচরা ব্যবসায়ীরাও ডিমের দাম বাড়িয়ে দেন। এছাড়া বর্তমানে কুমিল্লার দাউদকান্দি, চাঁদপুর, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কোল্ডস্টোরেজে ডিম সংরক্ষণ করা হচ্ছে। পরে ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে সেই ডিম।
২নং গেট এলাকার খুচরা ডিম বিক্রেতা নজরুল ইসলাম পারভেজ বলেন, আমরা পাইকারী ডিমের বাজার থেকে প্রয়োজন মতো অল্প অল্প ডিম এনে বিক্রি করি। পাইকারীতে ডিমের বাড়লে আমরা বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করি।
চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল শুক্কুর দৈনিক আজাদীকে বলেন, ডিমের দাম কোরবানির পর একটু বেশি ছিল। এখন কিছুটা কমছে। এর মধ্যে প্রশাসনের অভিযানের কারণে ডিমের বেচাবিক্রিতে একদম ভাটা পড়েছে। ক্রেতার অভাবে অনেক ডিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ডিমের সরবরাহও সব সময় এক রকম থাকছে না। তাই ডিমের বাজার উঠানামা করছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, বাজারে প্রতিটি পণ্যই নিয়ে চলছে সিন্ডিকেট। ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক পণ্য নিয়ে খেলছেন। এর সর্বশেষ সংযোজন হচ্ছে ডিম। প্রশাসনের উচিত ডিমের বাজারে নিয়মিত মনিটরিং করা।