জনদুর্ভোগ বানাম পরিবহন মালিকদের বর্দ্ধিত ভাড়ার উৎসব। কথা ছিল, পরিবহন মালিকরা বাস বাড়ার যে নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন হলে প্রতি ৫ কিলোমিটারে ভাড়বে ২ টাকা ৯০ পয়সা। অর্থাৎ ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়লেও বাস ভাড়া বাড়বে ৪০ শতাংশ। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে, সরকারের কাছ থেকে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত আসার আগেই ধর্মঘট শেষ, পরিবহন মালিকদের ভাড়া বৃদ্ধির উৎসব শুরু হয়ে গেল। আম জনতা পড়লো রোষানলে। গ্রাম্য প্রবাদ বাক্যে বলতে হয়, পাটাপুতার ঘষাঘষি মরিচের সর্বনাশি। এখানেই উল্লেখযোগ্য যে, রোববার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রেক্ষাপটে গণপরিবহনে ভাড়া পুনর্নির্ধারণে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সাথে পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের বৈঠক থেকে এ প্রস্তাব দেয়া হয়। আমার প্রশ্ন এখানেই, এই ধরনের বৈঠকে সাধারণ জনগণের কোন সম্পৃত্ততা নেই কেন? কোন কিছুতেই গণ জরিপ করে জনগণের মতামত কেন নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করে না সরকার? জনগণ কি আসলেই এ দেশের কেউ না? আমরা কি অভিভাবক শূন্য বাংলাদেশে বসবাস করছি? আপনি চাপিয়ে দিলেন, জনগণ বিনা বাক্যে তা মেনে নিতে হবে, এইটাই কি এই স্বাধীন বংলাদেশের তথা বঙ্গবন্ধুর সোনার বংলার সংস্কৃতি হয়ে যাচ্ছে? এবার আসি মূল তথ্যে, নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দূরপাল্লার বর্তমান বাসভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা, তা বাড়িয়ে ২ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ এতে কিলোমিটারপ্রতি যাত্রীকে বাড়তি ৫৮ পয়সা গুনতে হবে। ভাড়া বৃদ্ধির এ হার ৪০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। তাতে দেখা যাচ্ছে দূরপাল্লার একজন যাত্রীকে প্রতি পাঁচ কিলোমিটারে ২ টাকা ৯০ পয়সা বেশি ভাড়া দিতে হবে। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষের গণজরিপে দেখা গেছে যে, পরিবহন মালিকরা এই সব নিয়মের তোয়াক্কা না করেই, ইচ্ছে মত দ্বিগুণ হারে ভাড়া নিচ্ছেন, বেড়েছে তেলের দাম কিন্তু এখন দেশের সব পরিবহন তেলের হয়ে গেছে, তাই যাত্রী সাধারণের সাথে নিত্য দ্বন্দ্ব চলছে সড়ক পথে। তাই সরকারের কাছে আকুল আবেদন সি এন জি ফিলিং স্টেশনগুলো অতিসত্তর বন্ধ করে দিন। ভাড়া যখন সব পরিবহনে দ্বিগুণ নিচ্ছে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে, তা হলেই তেলেই গাড়ি চলাই উত্তম। এ লজ্জা জাতির, সাধারণ মানুষ সব এতিম ও অসহায় অভিভাবকহীন বাংলাদেশে।
লেখক : সহকারী শিক্ষক, মাদাম বিবিরহাট শাহজাহান উচ্চ বিদ্যালয়, সীতাকুন্ড, চট্টগ্রাম