আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কর্ণফুলীর পাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন। উচ্ছেদের বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা না মানায় আদালত অবমাননার অভিযোগে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ঘোষণা দিয়ে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ বলেন, এ বিষয়ে সমস্ত প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
গতকাল সোমবার নগরের সদরঘাটে মানববন্ধন করে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, আগামী বুধবার দুই শতাধিক সাম্পান নিয়ে ভোর ছয়টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চাক্তাই খালের মোহনায় নদীতে অনশন ধর্মঘট করবে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনসহ পাঁচটি সংগঠন। মানববন্ধন থেকে নদী কমিশনের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে সম্মিলিত অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রাহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী, পরিবেশ সংগঠক নেছার আহমেদ খান, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সিনিয়র সহ সভাপতি জাফর আহমদ, সহ সভাপতি লোকমান দয়াল, সদস্য মিজানুর রহমান, সংগঠক আরমান হায়দার, সদরঘাট সাম্পান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ। সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য ও লেখক দিলরুবা খানম।
আলীউর রাহমান বলেন, হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই নদীর উভয় তীরের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীকে পূর্বের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রশাসন চাইলে একাধিক ভবন নির্মাণ করতে পারবে। কিন্তু একটি কর্ণফুলী নদী, একটি চাক্তাই খাল সৃষ্টি করার ক্ষমতা প্রকৃতি ছাড়া আরো কারো নেই। যে কারণে কর্ণফুলী নদীকে স্বমহিমায় রক্ষা করার বিকল্প নেই।
মানবন্ধন থেকে জানানো হয়, ২০১৯ সালের মে মাসে কর্ণফুলী তীরের ২১৮১ টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে হাইকোর্ট চূড়ান্ত রায় দিয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষ এই রায় নিয়ে লুকোচুরি খেলছে। হালদার মোহনা থেকে বঙ্গোপসাগর কর্ণফুলীর মোহনা পর্যন্ত ষোল কিলোমিটার এলাকায় তিন হাজারের অধিক অবৈধ দখলদার কর্ণফুলী নদী দখল করে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুবিধাবাদী ভূমিদস্যুরা এই দখলের সাথে জড়িত। এসব অসাধু চক্র প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে প্রভাব বিস্তার করার কারণেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হচ্ছে না। কিন্তু এই অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই কর্ণফুলী তার স্বাভাবিক গতি প্রবাহ হারাবে।