অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করেছেন আদালত। অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে উচ্চ আদালতে তার পক্ষে করা আবেদনটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রদীপের পক্ষে তার আইনজীবীর এ সংক্রান্ত করা একটি আবেদন শুনানি শেষে চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ এ আদেশ দেন। এ সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন প্রদীপ কুমার দাশ। একপর্যায়ে তাকে প্রিজন ভ্যানে উঠিয়ে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রিজন ভ্যানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি, কোনো অপরাধ না করে শাস্তি পেয়েছি।’
এর আগে ঢাকার কাশিপুর কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম কারাগারে হয়ে আদালত কক্ষে প্রদীপকে হাজির করা হয়।
এদিকে একই সময় প্রদীপ কুমারের স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শুরু করেছেন আদালত। এ দিন সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী মো. রিয়াজউদ্দিন। সাক্ষ্যে তিনি বলেন, প্রদীপের ঘুষ, দুর্নীতির আয়ে তার স্ত্রী বাড়ি, গাড়ি ও স্বর্ণলংকারের মালিক হয়েছেন। অথচ তিনি একজন গৃহিণী। দুদক পিপি মাহমুদুল হক আজাদীকে এ সব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, প্রদীপের একটি আবেদন উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ পরে হবে। তবে প্রদীপের স্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারিও তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
এর আগে গত মাসের ১৭ তারিখ এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে প্রদীপ- চুমকির পক্ষে সময়ের আবেদন হওয়ায় তা হয়নি। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর প্রদীপ-চুমকির বিরুদ্ধে চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ হয়। এর আগে গত বছরের ৭ নভেম্বর মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে প্রদীপ-চুমকির এ মামলা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারের জন্য বদলি করা হয়। তারও আগে গত বছরের ২৮ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল হয়। যেখানে ২৯ জনকে সাক্ষী রাখা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৩ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজউদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬ (২) ধারা, ২৭ (১) ধারা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪ (২) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারাসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশে একে অপরের সহযোগিতায় অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৩ কোটি ৯৫ লাখ, ৫ হাজার, ৬৩৫ টাকার সম্পদ জ্ঞাতসারে ভোগ দখলে রেখেছেন।