অবৈধ আমদানি-চোরাই-ক্লোন ফোন বন্ধ করা হবে : ফয়েজ তৈয়্যব

| বৃহস্পতিবার , ২০ নভেম্বর, ২০২৫ at ৮:৩৭ পূর্বাহ্ণ

ক্লোন করা, অবৈধভাবে আমদানি ও চোরাচালানকৃত ফোন বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। গতকাল বুধবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, আমরা ক্লোন করা, অবৈধভাবে আমদানি ও চোরাচালানকৃত ফোন বন্ধ করবো। এখানে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। খবর বাংলানিউজের।

অবৈধ ফোনের অপরাধ সম্পর্কে তিনি জানান, সিমের ভুল রেজিস্ট্রেশন/ইকেওয়াইসি এবং সিম সংক্রান্ত অপরাধ, জুয়ার লিংক এবং এমএলএম প্রতারণার বাল্ক এসএমএস পাঠানো, ভুল এমএফএস রেজিস্ট্রেশন/ইকেওয়াইসি এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিং সংক্রান্ত অপরাধ, অনলাইন জুয়া ও স্ক্যামিং, অবৈধ ক্লোন ফোন সংক্রান্ত অপরাধ, প্যাটেন্ট ও প্রযুক্তিগত বিভিন্ন রয়্যালটি না দেওয়া, আয়কর ও শুল্ক ফাঁকি, ভারত ও চীন থেকে অবৈধ আনবঙড মোবাইল ফোন আমদানি, বিমানবন্দরের লাগেজ পার্টি, সীমান্ত চোরাচালান, স্থানীয় হ্যান্ডসেট উৎপাদন শিল্প বিকাশকে বাধা দেওয়া ইত্যাদি অপরাধের আওতায় রয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে নাগরিক, সমাজ, অর্থনীতির ও রাষ্ট্রের বহু স্তরের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার নানাবিধ বিষয় জড়িত। এর জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি, ব্যাংকিং খাত, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ক্রমাগত অনুরোধ আছে আমাদের কাছে। তাছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট এবং টেলিযোগাযোগখাতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, ট্যাঙ ফাঁকি দিয়ে এক বছর আগেই কোটি খানেক ফোন এনে দেশকে অবৈধভাবে ডাম্পিং করে ফেলার সুযোগ আর কাউকে দেওয়া হবে না। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলছি, কোনো মোবাইল ব্যবসায়ী বা দোকানিদের ব্যবসা নষ্ট করা হচ্ছে না, তারা দেশীয় উৎপাদকদের এবং বৈধভাবে আমদানি করা ফোন বিক্রি করবেন, সৎ পথে ব্যবসা করবেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আরও বলেন, বর্তমানে একটা আইএমইআই কোডের বিপরীতে লাখ লাখ ফোন বানিয়ে দেশে নিয়ে আসা হচ্ছে। এনইআইআর চালু হলে যা আর সম্ভব হবে না এজন্য এনইআইআর বন্ধে মাফিয়া চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। এসব লাগেজ পার্টি, ভুয়া এইচএস কোড, সীমান্ত চোরাচালানি, কেজি দরে আমদানির দিন শেষ করতে এর সঙ্গে জড়িত সব ধরনের ডিজিটাল অপরাধ বিস্তারে লাগাম টানা হবে। এখানে কোনো ছাড় নয়।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও উল্লেখ করেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) আলোচনা করা হয়েছে আমদানি শুল্ক কমাতে এনবিআরকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক হবে। পাশাপাশি দেশীয় উৎপাদকদের মূল্য কমাতে বিটিআরসির পক্ষে অনুরোধও জানানো হয়েছে। গ্রাহকের দিক বিবেচনা করে, বৈধ মোবাইল ফোনের দাম কমাতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পাশাপাশি, বৈধ পথে বিদেশ থেকে আনা ফোনের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজ করতে বিটিআরসি কাজ করছে। ইতোমধ্যেই জানানো হয়েছে, ১৬ ডিসেম্বরের আগে অ্যাকটিভ সবগুলো ফোন বৈধ হিসেবে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে। ভারত বা অন্যদেশে এভাবে গণহারে বিদেশি ফোন ঢোকে না। অবৈধভাবে আমদানি করে বা চোরাই ফোন এনে হাইএন্ড ফোনের দাম কমাতে হবে, এটা মানতে রেগুলেটর হিসেবে বিটিআরসি বাধ্য নয়। নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম ক্লোন করা হয়নি এমন ফোনে ব্যবহার করা হলে কখনই ঝামেলায় পড়তে হবে না। তাই সিম সব সময় নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয়েছে।

প্রবাসীরা বাইরে থেকে নিয়ম মেনে একটি বা দুটি ফোন ফ্রি আনবেন, নিয়ম মেনে রেজিস্ট্রেশন করবেন। কোনো ঝামেলা হবে না। দুটির বেশি ফোনের ক্ষেত্রে এনবিআরের আলাদা নিয়ম রয়েছে। রেজিস্ট্রেশন, ডিরেজিস্ট্রেশন এবং রিরেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি সমূহ কীভাবে সাধারণ নাগরিকদের জন্য সহজ করা যায়, সে বিষয়ে পাওয়া যৌক্তিক পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে আমলে নেওয়া হচ্ছে বলেও ফয়েজ তৈয়্যব মন্তব্য করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রবাসীদের উদ্যোগে হাসপাতালের জন্য ভূমি বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি
পরবর্তী নিবন্ধবিজয় দিবস ঘিরে কোনো শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা