অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য উৎসবমুখর পরিবেশ অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য ১০টি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। গতকাল বিকেলে টাইগারপাস চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি নির্বাচনী তথ্য–অনুসন্ধানী প্রতিনিধিদলের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। ওই প্রতিনিধি দলকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে ১০টি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তা তুলে ধরে মেয়র বলেন, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন তথা নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হতে হবে। সব দলের জন্য সমান সুযোগ তথা শাসক দল রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহার করবে না এবং বিরোধী দলগুলোকে ভয়ভীতি ছাড়া প্রচার চালাতে দিতে হবে। সঠিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভোটার তালিকা তথা হালনাগাদ ও নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে যাতে সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বাদ না পড়ে। আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা তথা পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, প্রশাসনসহ সব বাহিনীকে অরাজনৈতিক থাকতে হবে। তাদের ভূমিকা হবে নিরাপত্তা দেওয়া, ভয় সৃষ্টি নয়। মুক্ত গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা তথা সাংবাদিকরা যেন নির্ভয়ে নির্বাচন কাভার করতে পারেন। গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।
ডা. শাহাদাত বলেন, সক্রিয় নাগরিক সমাজ ও পর্যবেক্ষক তথা দেশি–বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিক সমাজকে ভোটার সচেতনতা ও অনিয়ম প্রতিবেদন করার সুযোগ দিতে হবে। স্বচ্ছ নির্বাচনী প্রক্রিয়া তথা মনোনয়ন থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ স্বচ্ছ হতে হবে। বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা তথা নির্বাচনী বিরোধ দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি তথা শাসক ও বিরোধী দলকে সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ আচরণ প্রদর্শন করতে হবে। ভোটার শিক্ষা ও অংশগ্রহণ তথা ভোটারদের তাদের অধিকার ও ভোটদানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। এ ১০ টি বিষয় নিশ্চিত করতে পারলে উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত হবে, এতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
সিনিয়র ইলেকশন এক্সপার্ট রিকার্ডো সেলেরির নেতৃত্বে সাত সদস্যের এ প্রতিনিধি দলে ছিলেন হেড অব সেক্টর (বেলজিয়াম) রেজিনাল্ড সোয়েনেন, পলিসি অফিসার, (জার্মানি) ফ্রেডেরিক শুমান, টিম লিডার (সুইডেন) মেটে বাকেন, লিগ্যাল এক্সপার্ট (অস্ট্রিয়া) জোয়াকিম ম্যানুয়েল ওয়ালি), লজিস্টিকস এক্সপার্ট (পর্তুগাল) টেরি মারে পিন্টো, সিকিউরিটি এক্সপার্ট (যুক্তরাজ্য) ইয়ান জেমস মিলার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান এবং প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী।