মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মো. ইউছুপ মিয়ার পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামের আগ্রাবাদস্থ চৌমুহনীতে। জন্ম ১৯৩৯ সালের ২০ জুন। তৎকালীন সময়ে মেট্রিক পাস করে ইউছুপ মিয়া সংসারের হাল ধরতে ছোটখাটো ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। এরই মধ্যে জহুর আহাম্মদ চৌধুরী, এম.এ হান্নান এবং আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর সাথে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে ইউছুপ মিয়াকে আর দমিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। দেশকে স্বাধীন করার নেশায় মত্ত হয়ে উঠেন তিনি। নিঃসন্তান চাচা জামাল আহাম্মদের অনুরোধে যুদ্ধে না গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহ, খাবার-দাবার ও টাকা-পয়সা ইত্যাদির ব্যবস্থা করার দায়িত্ব নেন। নিজের তিনতলা ভবনের নিচতলায়, খাটের নিচে মেঝেতে গর্ত করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ও ছয় দফার চিহ্ন সম্বলিত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর টুপি মা-চাচীদের সহায়তায় পুঁতে সংরক্ষণ করে রাখেন। এ খবর জেনে যায় স্থানীয় রাজাকাররা। তারা হানাদার বাহিনীকে লেলিয়ে দেয় ইউছুপ মিয়ার বিরুদ্ধে। একদিন অতর্কিত গুলির মুখে বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী মির্জা আহামদ মিয়ার ঘরে আশ্রয় নেন ইউছুপ মিয়া। এই পরিবার ইউছুপ মিয়াকে দেশ স্বাধীন হওয়া অবধি আশ্রয় দিয়ে তার প্রাণ রক্ষা করেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে নিয়ে আগ্রাবাদ এলাকায় সন্ত্রাস দমন কমিটি নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন ইউছুপ মিয়া। আজ ইউছুপ মিয়া বেঁচে নেই। তার নাতি-পতিরা দাদার কৃতিত্বে আনন্দিত। তারা এখন চায় মুক্তিযুদ্ধে দাদার বীরত্বের স্বীকৃতি। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের আকুল আবেদন, মরহুম ইউছুপ মিয়াকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হোক।