অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ চিকিৎসককে মারধর

পটিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ১০ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

পানিতে ডুবে যাওয়া শিশু চিকিৎসকের অবহেলায় মারা গেছে এমন অভিযোগে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. জিয়াউদ্দিনকে মারধর করেছে বিক্ষুব্ধ শিশুর স্বজনরা। গতকাল শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। ডা. জিয়াউদ্দিন বাদি হয়ে পটিয়া থানায় শিশুর পিতা ও ভাইয়ের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) জিয়াউদ্দিন সাকিব জানান, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বরলিয়া ইউনিয়নের ওকন্যারা গ্রামের ইমরান হোসেন তার দুই বছরের ছেলে জুবায়ের হোসেনকে পুকুরের পানি থেকে উদ্ধার করে মুমুর্ষূ অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ইসিজি করে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটিকে বাড়িতে নেয়ার পর নড়েচড়ে উঠেছে ও বেঁচে আছে বলে ঘণ্টাখানেক পর আবারো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এসময় আবারো চিকিৎসকরা দেখে মৃত বলেই ঘোষণা করেন। তখন আগে ভুল চিকিৎসায় শিশুটির মৃত্যুর অভিযোগ তুলে সাথে আসা এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমার ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
হাসপাতালের এক প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আজাদীকে বলেন, মৃত শিশুটির চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে অভিযোগ করে আরএমও জিয়া উদ্দিনের ওপর হামলা চালানো হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ লোকজনের কিলঘুষিতে আরএমও হাতে ও মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
শিশুটির চাচা মোহাম্মদ ইরফান জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাঁর ভাতিজা পুকুরে ডুবে যাওয়ার পর মুমুর্ষূ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইসিজি করে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু ভাতিজাকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর আবার নড়াচড়া করছিল। এতে দ্রুত আবারও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাদের পূর্বের ইসিজি প্রতিবেদন নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন এবং তেড়ে আসেন। এসময় চিকিৎসকের ওপর কে বা কারা হামলা করেছে তা জানি না। তিনি জানান, চিকিৎসকের অবহেলায় ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাবেদ বলেন, পানিতে ডুবে মারা যাওয়া শিশুটি আবার বেঁচে আছে এমন অভিযোগ এনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসারের ওপর হামলা করা হয়েছে। এ কারণে হামলার অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জিয়াউদ্দিন মো. সাকিবের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান। তিনি বলেন, মৃত্যু পরবর্তী ২-৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত দেহের পেশি সংকোচন অবলোকন করা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এর জন্য চিকিৎসককে দায়ী করে তার ওপর হামলা ন্যাক্কারজনক একটি ঘটনা। ডা. মিনহাজ হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। সেই সাথে পটিয়ায় কর্মরত চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগর বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভাঙার আভাস
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে হোটেল কক্ষে তরুণীর ঝুলন্ত লাশ স্বামী পলাতক