কয়েক সপ্তাহ ভোগান্তির পর অবশেষে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সার্ভারের সমস্যা অনেকটাই কেটে গেছে। গতকাল দুপুরের পর ঘণ্টা দেড়েক সার্ভার ধীরগতির ছিল, বাকি সময়টাতে আর কোনো ত্রুটি দেখা দেয়নি। কাস্টমসের সার্ভারের সমস্যা সমাধান হওয়ায় ব্যবসায়ীরা স্বস্তি প্রকাশ করেন। আমদানি–রপ্তানির জন্য বিল অব এন্ট্রি এবং বিল এঙপোর্ট দাখিল করতে সময় লাগছে না। ফলে শুল্কায়ন কার্যক্রমে বেড়েছে গতি। এছাড়া চট্টপ্রাম বন্দরের পণ্য খালাসও বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সার্ভারের জটিলতার জন্য সেবাগ্রহীতারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও আমদানি–রপ্তানি নথি দাখিল করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। এতে ব্যাহত হয় পণ্যের শুল্কায়ন কার্যক্রম। শুল্কায়ন ব্যাহত হওয়ায় যথা সময়ে হয়নি পণ্য খালাসও। চট্টগ্রাম বন্দরে বাড়ে কন্টেনার জট। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আইটি এঙপার্ট এসে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সার্ভার এবং কর্মকর্তাদের ব্যবহৃত সকল কম্পিউটার ইন্টারনেট সংযোগ চেক করে দেখে তারা নিশ্চিত হন, এই সমস্যাটি চট্টগ্রাম কাস্টমসের অভ্যন্তরীণ না। এটি মূলত এনবিআরের কেন্দ্রীয় সার্ভারের ত্রুটির কারণে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত গত দুইদিন ধরে সার্ভারের ধীরগতির যে সমস্যাটি আর সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। সার্ভারের স্পিড বেড়েছে। ফলে কাজও সুচারুভাবে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যকে গতিশীল করার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে অটোমেশনের যাত্রা শুরু হয়। এক সময় অ্যাসাইকুডা প্লাস প্লাস ভার্সন থাকলেও গত ২০১৩ সাল থেকে কাস্টমসে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড পদ্ধতি চালু হয়। এই পদ্ধতিতে আামদানি রপ্তানি কার্যক্রমের প্রায় সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। কিন্তু মাঝে মাঝেই সার্ভারের গতি কমে যাওয়া কিংবা বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে আমদানিকারকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দেখা গেছে, যে কাজ এক মিনিটে হওয়ার কথা সেটি করতে পাঁচ মিনিট লাগছে। কাস্টমসে আমদানি–রপ্তানি মিলে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার পর্যন্ত বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী রিগ্যান দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ চট্টগ্রামে সার্ভারের সমস্যার কারণে আমরা অতিষ্ঠ ছিলাম। তবে আশার কথা হচ্ছে–গত দুই দিন ধরে সার্ভারের সমস্যার অনেক উন্নতি হয়েছে। কাজও ভালোভাবে চলছে। তবে শুধুমাত্র আজ (গতকাল) দুপুরের পর দেড়ঘণ্টা সার্ভারের ত্রুটির কারণে কাজ করতে পারেনি। এ কারণে আমাদের কাজের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়েনি।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপ–কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, সার্ভারের সমস্যা সমাধানে এনবিআরের বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করেছেন। ফলে সার্ভারের উন্নতি হয়েছে। এতে আমাদের সেবাগ্রহীতারা খুশি।