জীবদ্দশায় মনি কিশোরের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবশেষে তাকে কবরে শায়িত করা হয়েছে। ঢাকার বনশ্রীর বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদে জানাজা শেষে গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টায় দক্ষিণ বনশ্রী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। এর আগে গত ১৯ অক্টোবরে রামপুরার বাসা থেকে মনি কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। খবর বিডিনিউজের।
গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক মিল্টন খন্দকার গতকাল শুক্রবার জানিয়েছেন, একমাত্র মেয়ে নিন্তি চৌধুরীকে গায়ক তার মৃত্যু পরবর্তী কাজগুলির বিষয়ে আগেই নির্দেশনা দিয়ে গিয়েছিলেন। নিন্তিকে মনি কিশোর আগেই এ ব্যাপারে বলে গিয়েছিল। মেয়ে পরীক্ষার কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে আসতে না পারলেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে দাফন সম্পন্ন করার কাজটি করেছে। পুলিশের অনুমতি পাওয়ার পর যথাযথ মর্যাদা ও সম্মানের সাথে দাফন করা হয়েছে।
পেশাদার সংগীতজীবনের শুরুতে শামীমা চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে হয় মনি কিশোরের। দুই দশক আগে তাদের দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটে। বিয়ের সময় তিনি সনাতন থেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর থেকে মনি কিশোর বাসায় একাই থাকতেন। তার একমাত্র মেয়ে নিন্তি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
দাফনে বিলম্ব হওয়ার কারণ নিয়ে মিল্টন খন্দকার বলেন, ধর্মান্তরিত হওয়ার কাগজ দেখতে চেয়েছিল পুলিশ, যেন পরে আবার কোনো জটিলতা না তৈরি হয়। পরিবার থেকে এফিডেভিটসহ ধর্মান্তরিত হওয়ার কাগজ দেখানো হলে, পুলিশ তাকে দাফনের অনুমতি দেয়। এর আগে মরদেহ হিমঘরে রাখা ছিল। কদিন আগে খবর ছড়িয়েছিল জনকল্যাণ সংস্থা আঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে গায়ক মনি কিশোরের মরদেহ ‘দাফন করা হবে’। পরে পরিবারের সদস্যরা ওই খবরকে গুজব বলে নাকচ করে দিয়েছিলেন।
তখন শিল্পীর ভগ্নিপতি নাট্যশিক্ষক বিপ্লব বালা বলেছেন, গায়ক মনি কিশোরের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরেই থাকছে। প্রয়াত শিল্পীর মেয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কয়েকদিন ধরে দেখা না পেয়ে মনি কিশোরের বাড়ির দরজায় গিয়ে গত ১৯ অক্টোবর তাকে ডাকাডাকি করেন বাড়িওয়ালা। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় বাড়িওয়ালা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে ওই বাড়ির দরজা ভেঙে গায়কের নিথর দেহ উদ্ধার করে। পুলিশের ধারণা আর চার বা পাঁচ দিন আগে মনি কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া না যাওয়ায় অসুস্থ্যতাজনিত কারণে মনি কিশোর মারা যেতে পারেন বলে ধারণা ছিল পুলিশের। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়।