গত বছরের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরই মধ্যে ছয় মাসেরও বেশি সময় কেটে গেছে। কিন্তু সংস্থার সাব কমিটিগুলো গঠন করা হচ্ছিলনা। হচ্ছে হবে করে করে দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও অবশেষে আলোর মুখ দেখেছে সাব কমিটিসমুহ। গত রোববার রাতে সংস্থার নির্বাহি কমিটির সভায় ২৪ টি সাব কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষনা করা হয়। আগেই সিদ্ধান্ত ছিল যে, সংস্থার নির্বাহী কমিটিতে কোষাধ্যক্ষ পর্যন্ত পদে যারা রয়েছেন তাদেরকে কোন সাব কমিটির সভাপতি কিংবা সম্পাদক করা হবে না। সে হিসেবে এই কমিটিগুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে তরুণদের আধিক্য রয়েছে। বেশিরভাগ কমিটিতেই তরুণরাই জায়গা করে নিয়েছে। কোন কোন কমিটির চেয়ারম্যানও বেশ তরুণ। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবারের সাব কমিটিগুলোর মধ্যে একটি নতুনত্ব এনেছে। তা হচ্ছে ক্রিকেট কমিটিটাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যার একটি মূল কমিটি আর অন্যটি ডেভেলপম্যান্ট কমিটি। মূল ক্রিকেট কমিটির টেয়ারম্যান যথারীতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। বর্তমানে এই পদে রয়েছেন রাকিব হাসান। সম্পাদক হিসেবে টিকে গেছেন আবদুল হান্নান আকবর। নানা ব্যর্থতার পরও আবদুল হান্নান আকবর বহাল রয়ে গেছেন। আর ডেভেলপম্যান্ট কমিটিতে চেয়ারম্যান করা হয়েছে ক্রিকেট অন্তপ্রাণ সংগঠক গওহর সিরাজ জামিলকে। আর সম্পাদক করা হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে ক্রিকেট কমিটির যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা শওকত হোসাইনকে। ফুটবলে সম্পাদক পদে বহাল রয়েছেন মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি এবারে জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের নির্বাচনে সহ সভাপতি হয়েছেন। তার চেয়ারম্যান একজন উপ পুলিশ কমিশনার। হকি কমিটির সম্পাদক পদে পরিবর্তন এলেও চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন আসেনি। আগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে চেয়ারম্যান বহাল রাখা হয়েছে হকি কমিটিতে। সম্পাদক করা হয়েছে সাবেক হকি খেলোয়াড় সাইফুল আলম বাবুকে। তিনি এবারেই প্রথম কাউন্সিলর হয়ে এসেছেন সিজেকেএসএ। ব্যাডমিন্টন কমিটিতে আগের কমিটির সম্পাদক দিদারুল আলমকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তাকে করা হয়েছে চেয়ারম্যান। আর সম্পাদক করা হয়েছে শতাব্দী গোষ্টীর কাউন্সিলর সাহেদুল আলমকে। হ্যান্ডবলের চেয়ারম্যান করা হয়েছে নির্বাহী সদস্য হাসান মুরাদ বিপ্লবকে। আর সম্পাদক করা হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে হ্যান্ডবল খেলা কল্লোল দাশকে। তিনি বশে কয়েক বছর ধরে হ্যান্ডবল কমিটির যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এবারে তার হাতে দেওয়া হলো হ্যান্ডবলের গুরু দায়িত্ব। দাবা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে জাতীয় দাবাড়ু তনিমা পারভীনকে। এই কমিটিতে চেয়ারম্যান করা হয়েছে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শহীদ উল্যাহকে। সম্পাদক করা হয়েছে সাইফুল আলম খানকে। তরুণ এই ক্রীড়া সংগঠক নানা সময়ে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষতার সাথে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট সাঁতারের চেয়ারম্যান করা হয়েছে আগের কমিটির সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মাহবুবকে। আর সম্পাদক করা হয়েছে তরুণ সংগঠক রায়হান উদ্দিন রুবেলকে। এই তরুণও নানা সময়ে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষতার সাথে। ভলিবল কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে ওয়াহিদ দুলালকে। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে এই ভলিবলের সাথে যুক্ত। নিজেও ছিলেন ভলিবল খেলোয়াড়। আর সম্পাদক করা হয়েছেন তরুণ আবু জাহেদকে।
বাস্কেটবল কমিটির চেয়ারম্যান এবং সম্পাদক দুজনই সাবেক খেলোয়াড়। মুক্তবিহঙ্গ ক্লাবের আলি আজম এই কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি ফেডারেশনেও রয়েছেন। আর প্রসেনজিত দত্ত রাজুকে করা হয়েছে সম্পাদক। তিনিও একজন সাবেক বাস্কেটবল খেলোয়াড়। টেবিল টেনিসে আগের কমিটির চেয়ারম্যান পরিবর্তন হলেও বহাল রয়েছেন সম্পাদক। এবারে এই কমিটির চেয়ারম্যান সিজেকেএস নির্বাহী সদস্য রাশেদুর রহমান মিলন। আর সম্পাদক আগের কমিটিতে দায়িত্ব পালন করা হারুন অল রশিদ। খো খো কমিটিতে চেয়ারম্যান এবং সম্পাদক দুজনই নতুন। আগের কমিটির সম্পাদক জসিম উদ্দিকে করা হয়েছে এই কমিটির চেয়ারম্যান। আর সম্পাদক করা হয়েছে আরেক তরুণ ক্রীড়া সংগঠক সরওয়ার আলম চৌধুরী মনিকে। এই তরুণ এবারের জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের নির্বাচনে নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দীর্ঘ দিন ধরে ঝিমিয়ে পড়া লন টেনিসকে জাগ্রত করতে দুই নতুনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই কমিটির। যার চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ক্রীড়াঙ্গনে সবচাইতে তরুণ সৈয়দ মোহাম্মদ তানসীর। আর সম্পাদক পদে রয়েছেন সাহেলা আবেদীন রিমা। কারাতে কমিটির চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আর সম্পাদক তুলু উস শামস। উশু কমিটির চেয়ারম্যান শাহজাদা আলম আর সম্পাদক আকতারুজ্জামান। তায়কোয়ান্ডো কমিটিতে সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরীকে করা হয়েছে চেয়ারম্যান আর সুমন দে কে করা হয়েছে সম্পাদক। দুজনই তায়কোয়ান্ডো ফেডারেশন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। আর্চারির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান আর সম্পাক শাহবাজ মুনতাসির চৌধুরী। জুডো কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল হক ডিউক আর সম্পাদক সোহেল আহমেদ। ক্যারম কমিটিতে গত কমিটির সম্পাদক এনামুল হককে পদোন্নতি দিয়ে করা হয়েছে চেয়ারম্যান। আর তার সম্পাদক করা হয়েছে রিফাত বিন আমিনকে। চুকবল কমিটির চেয়ারম্যান এইচ এম সোহেল এবং সম্পাদক করা হয়েছে সালাউদ্দিনকে। ওসপাক টাকরো কমিটির চেয়ারম্যান নোমান আল মাহমুদ এবং সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ। অ্যাথলেটিক্সের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুই অ্যাথলেটকে। যেখানে চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন জাতীয় অ্যাথলেট শর্মিস্টা রায় এবং সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন সাবেক জাতীয় সাইক্লিস্ট আবু হেনা মোস্তফা কামাল টুলু। রোলার স্কেটিং কমিটির চেয়ারম্যার রেখা আলশ আর সম্পাদক আদিল কবির। সাইক্লিং কমিটির চেয়ারম্যান চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী আর সম্পাদক রেজিয়া বেগম ছবি। কাবাডি কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সম্পাদক জাহিদ হোসেন। এখন কমিটি গুলো পূর্ণাঙ্গ কবে হবে সেজন্যই থাকতে হবে অপেক্ষায়।