অফিসে ২৫% বিদ্যুৎ কমানোসহ ৮ সিদ্ধান্ত

| বৃহস্পতিবার , ২১ জুলাই, ২০২২ at ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় সরকারি দফতরগুলোতে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫ শতাংশ কমানোর পাশাপাশি ব্যয় সাশ্রয় এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে আটটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন অফিসে জ্বালানির বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে জ্বালানি তেল ব্যবহার কমাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সশরীরে সভা পরিহার এবং একেবারে জরুরি না হলে বিদেশ ভ্রমণ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথাও তুলে ধরেন তিনি। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক শেষে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান। সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ে কার্যকর কর্মপন্থা ঠিক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। এতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা অংশ নেন। খবর বিডিনিউজের।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত : ১. বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনতে সকল মন্ত্রণালয় (মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সকল অফিস) প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা নিরূপণ করবে। সরকারি সব দপ্তরে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫% হ্রাস করতে হবে। ২. জ্বালানি খাতের বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহারের লক্ষে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় পরিপত্র জারি করবে। অর্থাৎ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা তেল ব্যবহার করেন এখন তাদের বরাদ্দ ২০ শতাংশ কম হবে। ৩. অনিবার্য না হলে শারীরিক উপস্থিতিতে সভা পরিহার করতে হবে এবং অধিকাংশ সভা অনলাইনে আয়োজন করতে হবে। ৪. অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশ ভ্রমণ যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। ৫. খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে বাজার মনিটরিং, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মজুদদারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যান্য পদক্ষেপ জোরদার করতে হবে। ৬. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী পরিবহনে ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার যৌক্তিকিকরণের লক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। ৭. অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বৃদ্ধিকল্পে অর্থবছরের শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআরকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ৮. প্রতিটি মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্রয় পরিকল্পনা পুনঃপর্যালোচনা করে রাজস্ব ব্যয় কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

বৈঠকে জ্বালানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার মনিটিরংসহ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে জানান মুখ্য সচিব। তিনি বলেন, অফিস-আদালতে আমরা বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে পারি, যেন উৎপাদনও খুব বেশি ব্যাহত না হয়। অফিসে যদি দুইটি ফ্যানের জায়গায় একটি ফ্যান চালানো হয়, তাহলেও কিন্তু আমরা কাজ করতে পারব। সেজন্য আমরা সরকারি অফিসগুলোতে সহনীয় মাত্রায় ২৫ শতাংশ বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছি।

একই সঙ্গে সরকারি দফতরগুলোতে জ্বালানি খাতের বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহারে অর্থ বিভাগ থেকে সার্কুলার জারি করার সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, অনেক আগে একবার এ খাতে বরাদ্দের ১০ শতাংশ কম ব্যবহার করতে বলা হয়েছিল। এবার বলা হচ্ছে- যারা জ্বালানি ব্যবহার করবে, তারা এখনকার চেয়ে ২০ শতাংশ কম ব্যবহার করবে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, অনিবার্য না হলে শারীরিক উপস্থিতিতে সভা পরিহার করতে হবে। অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এর আগে একবার সার্কুলার জারি করে বলা হয়েছিলো অফিসগুলোতে এসির তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রিতে রাখতে হবে। নতুন করে আমরা আবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এসির তাপমাত্রা যেন ২৪/২৫ ডিগ্রির কম না হয়। এতে বিদ্যুতের ব্যবহার কিছুটা হলেও কমে যাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দেশনা তুলে ধরে মুখ্য সচিব বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক গাড়ি চলাচল করে। সেখানে তেল-বিদ্যুতের ব্যবহার রয়েছে। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলেছি, শিক্ষার্থীরা যেন ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে।

অনেকে মিলে বাস বা মাইক্রোবাসে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের বিষয়টি কিভাবে নিশ্চিত করা যায়, সেটি সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে মন্ত্রণালয়কে কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আজ ঘর পাচ্ছে ৫৮৭ পরিবার
পরবর্তী নিবন্ধজাতিসংঘ পার্ক হচ্ছে সবুজ উদ্যান