ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের প্রধান হোতা শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন এবং ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এটি বলতে আমার কোনো দ্বিধা নেই। এ বিষয়ে সবারই সতর্ক থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। না হলে জাতি হিসেবে আমরা অনেক বড় বিপদের সম্মুখীন হব। গতকাল বুধবার সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব। খবর বাংলানিউজের।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন যে প্রবণতা শুরু হয়েছে, বাংলাদেশের এই যে অর্জন, তা ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে কিছু ব্যক্তি বা কিছু লোক চেষ্টা করছে। আমি এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাব। এ মুহূর্তে আমরা আরেকটি বিপর্যয় নিতে পারি না।
রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে তিনি বলেন, আরেকটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আমি মনে করি যে আমার মতামত দেওয়া সমুচিত নয়। কারণ এ মতামত দেবে জনগণ, কে রাজনীতি করবে আর কে রাজনীতি করবে না। নির্বাচনে যারা জনগণের কাছে খারাপ হয়ে যাবে, তারা বাতিল হয়ে যাবে অথবা পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি আরও বলেন, আমি গণতান্ত্রিক একজন ব্যক্তি, আমি বিশ্বাস করি যে, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, এটি জনগণের বিষয়।
উপদেষ্টা নিয়োগ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে উপদেষ্টা নিয়োগ করার কোনো প্রচলন নেই। এটি প্রধান উপদেষ্টার নিজস্ব এখতিয়ার। তাদের সুবিধার জন্য যাকে যাকে নেওয়া দরকার, তাকে তারা নেবেন। এ ব্যাপারে বিএনপির কোনো বক্তব্য নেই। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অত্যন্ত বিচক্ষণ, মেধাবী এবং যোগ্য মানুষ। তিনি যাকে প্রয়োজন মনে করবেন তাকেই উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করবেন। তবে বিএনপির পরামর্শ থাকবে, এ ব্যাপারে যেন তারা সতর্ক থাকেন, এই নিয়োগে যেন বিতর্কিত কাউকে না নেয়া হয় বা কোনো বৈষম্য না রাখা হয়। এ ব্যাপারে ভুল হয়ে থাকলে তারাই সেটা সংশোধন করবেন বলে আমরা আশা করি।
তিনি বলেন, এ অন্তর্র্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব হবে নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, সবাই যেন ভোট দিতে পারেন এবং সবাই যাতে অংশ নিতে পারে, সে জন্য কাজ করা। নিরপেক্ষ লোকজনকে নির্বাচনের জায়গাগুলোতে বসাতে হবে। বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ করা, প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করা, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য এগুলোই প্রধান কাজ। সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা রিজেক্ট করেছি, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন সম্ভব নয়।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ জেলা, উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।