স্বাস্থ্য বিভাগের গাইউলাইন অনুযায়ী, করোনা থেকে বাঁচতে অনুসরণ করতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। এক্ষেত্রে সঠিক নিয়মে পরতে হবে মাস্ক। ঘন ঘন হাত ধোয়ার পাশাপাশি নিশ্চিত করতে হবে সামাজিক দূরত্ব।
সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরায় উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন সময়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন, এনজিও এবং রাজনৈতিক ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরা তা বিতরণ করেন। এসময় অন্যের মুখে তারা মাস্ক পরিয়ে দেন। গণমাধ্যমেও ফলাও করে প্রচার করা হয় মাস্ক পরিয়ে দেয়ার সেই দৃশ্য। যদিও এভাবে অন্যের মুখে মাস্ক পরিয়ে দেয়া উচিত না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, যিনি পরিয়ে দিচ্ছেন এবং যার মুখে পরানো হচ্ছে উভয়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। কারণ, মাস্ক পরিয়ে দিতে গেলে সামাজিক দূরত্ব মানা হয় না। চিকিৎসকরা বলছেন, সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে অন্তত ৩ থেকে ৬ ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন। যা মাস্ক পরানোর সময় বজায় রাখা অসম্ভব। আবার পথেঘাটে মাস্ক বিতরণের সময় বিতরণকারীর হাত জীবাণুমুক্ত কিনা সেটাও জানার সুযোগ থাকে না। ফলে মাস্ক বিতরণের সময় অবশ্যই হাত ধুয়ে অথবা স্যানিটাইজ করা উচিত। মাস্ক পরিয়ে দেয়া নিরুৎসাহিত করতে এ ধরনের ছবি গণমাধ্যমে প্রচার না করারও পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহম্মদ আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমরা দেখি, খুব কাছ থেকে অন্যজনকে মাস্ক পরিয়ে দেয়া হচ্ছে। এটা ঠিক না। মাস্ক পরিয়ে দিতে গেলে সোশ্যাল ডিস্টেন্স মেইনটেন বা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, করোনা থেকে বাঁচার জন্য তিনটি বিষয়ে জোর দেয়া হচ্ছে। মাস্ক পরা, ঘন ঘন হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। কিন্তু মাস্ক পরিয়ে দিতে গেলে খুব কাছে যেতে হয়। ক্লোজ কন্ট্রাক্টে যেতে হয়। এতে যে মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছেন এবং যাকে পরিয়ে দিচ্ছেন দুজনের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। তাই মাস্ক পরিয়ে দেয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। এটাকে নিরুৎসাহিত করা উচিত। তবে চাইলে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মাস্ক বিতরণ করা যাবে।
প্যাকেট থেকে খুলেই পথে-ঘাটে মাস্ক বিতরণ করা হয়। কিন্তু যারা বিতরণ করছেন তাদের হাত আদৌ জীবাণুমুক্ত কিনা নিশ্চিত না। এক্ষেত্রে মাস্ক বিতরণের ফলে কোনো ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলার পথে পরিবহন বা অন্য কিছু স্পর্শ করছেন মাস্ক বিতরণকারী। হয়তো কোথাও বসে কিছু খেয়েছেন। সেক্ষেত্রে তার হাতে জীবাণু লাগতে পারে। আবার রাস্তাঘাটে তো আর ঘন ঘন হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা নেই। সঠিকভাবে হাত স্যানিটাইজ করে হাত জীবাণুমুক্ত করেছেন কিনা সেটাও নিশ্চিত না। ফলে এক ধরনের ঝুঁকি তো থাকছেই। তাই হাত ধোঁয়ার সুযোগ না থাকলে হাত স্যানটাইজ করে মাস্ক বিতরণ করা উচিত।