সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ নেওয়াকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারকে বৈধ বলে মেনে নিয়েছে, কাজেই এ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না। গতকাল সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মো. মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট খারিজ করে এ পর্যবেক্ষণ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আকতার হোসাইন, সৈয়াদা সাজিয়া শারমিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রাশেদুল হক ও সাব্বির হোসাইন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি গত ৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত চাইলে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি আপিল বিভাগের সাত বিচারপতি ‘স্পেশাল রেফারেন্স নং–১॥২০২৪’–এ তাদের মতামত দেন। ঐতিহাসিক সে রেফারেন্সে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ও উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করানো যেতে পারে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিগত ৬ আগস্ট–২০২৪ তারিখে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান–এর অনুচ্ছেদ ৪৮ (৩) অনুসারে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করা সম্ভবপর নয়। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করার বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ হতে গত ৮/৮/২০২৪ তারিখের ১০,০০,০০০০.১২৭.৯৯.০০৭.২০.৪৭৫ নং স্মারকে প্রেরিত পত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জনগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত কামনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের বক্তব্য শোনা হলো। এমতাবস্থায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কোনো বিধান না থাকায় উল্লিখিত প্রশ্নের বিষয়ে বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই মতামত প্রদান করছে যে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার নিমিত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি উক্তরূপে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টাগণকে শপথ পাঠ করাতে পারবেন।’