প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার জন্য কলেজে আসন না পেলেও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন বহু কলেজই শিক্ষার্থীর জন্য হাহাকার করছে। মফস্বল এলাকার বহু কলেজেই দুইশ’ আসনের বিপরীতে ৫/৭জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। বিশেষ করে মফস্বলের কলেজগুলোতে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীর আকাল দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীর অভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে বলেও আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন ২৮৫টি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সর্বমোট আসন রয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার। গত এসএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮১৯ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। এদের মধ্যে পাস করেন ১ লাখ ২০ হাজার ৮৬ জন শিক্ষার্থী। এসএসসি পাস করা সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে অন্তত ৫০ হাজার আসন ফাঁকা থাকার কথা। অথচ গতকাল পর্যন্ত তিন দফায় আবেদন করেও ৭ হাজার ৪০২ জন শিক্ষার্থী কোনো কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হননি। এসব শিক্ষার্থী ঠিক কখন কিভাবে কোন কলেজে ভর্তি হবেন তা নিয়ে ইতোমধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকে বোর্ডে গিয়েও খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছেন। একদিকে আসনের জন্য শিক্ষার্থীদের দৌঁড়ঝাপ চললেও অন্যদিকে বহু কলেজই শিক্ষার্থীর জন্য হাহাকার করছে। ১ লাখ ৭৫ হাজার আসনের বিপরীতে গতকাল পর্যন্ত ভর্তি নিশ্চিত করেছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ৭৫ জন শিক্ষার্থী। সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন ২৮৫টি কলেজের মধ্যে প্রথম সারির কলেজগুলো শিক্ষার্থী পেলেও বহু কলেজই শিক্ষার্থী সংকটে পড়েছে। মফস্বলের বহু কলেজেই আসন খালি রয়েছে। এসব কলেজের শিক্ষার্থী সংকট প্রকট হয়ে উঠায় স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আশংকাজনক পর্যায়ে কমে গেছে। এক একটি কলেজে দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ আসনের বিপরীতে ৫/৭জন ভর্তি হয়েছেন এমন কলেজ রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগে ৫০ জন শিক্ষার্থী নেই এমন কলেজের সংখ্যা অনেক। এসব কলেজে আসনগুলো খালি থাকছে বলেও বোর্ডের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা উল্লেখ করেন।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মোহাম্মদ জাহেদুল হক বিভিন্ন কলেজে শিক্ষার্থী সংকটের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, বহু কলেজেই আসন খালি রয়েছে। শিক্ষার্থী নেই। তিনি বুয়েট থেকে প্রাপ্ত হিসেবে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আসন না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, পছন্দক্রমে গোলমাল করায় এসব শিক্ষার্থী কলেজ পাননি। আবার কেউ কেউ দশটি কলেজের পরিবর্তে পছন্দের ৫/৬টির নাম উল্লেখ করেছেন। প্রথম সারির কলেজগুলোর নাম লিখে তারা আবেদন করেছেন। হয়তো কেউ কেউ তিনবারই একইভাবে আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, কেউ যদি কম জিপিএ কিংবা মার্কস নিয়ে বার বার চিটাগাং কলেজের নাম লিখে যায় তাহলে তিনি তো আসন পাবেন না। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে অধ্যাপক জাহেদুল হক মন্তব্য করেন।
আগামী ৫ অক্টোবর ক্লাস শুরু হচ্ছে বলে উল্লেখ করে শিক্ষা বোর্ডের পদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে আসন না পাওয়া শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত হয়তো নেয়া হবে। কিন্তু যেসব কলেজ শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছেন তাদেরকে এই সংকট নিয়েই সামনের দিনগুলো কাটাতে হবে।