অনেক উন্নত দেশেও গণমাধ্যম বাংলাদেশের মতো স্বাধীন নয় : তথ্যমন্ত্রী

| বুধবার , ৩১ মার্চ, ২০২১ at ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে অসত্য বা ভুল খবর প্রচারের কারণে সংবাদপত্র বন্ধ হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করে, অনেক উন্নত দেশেও তা নেই। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘৫০ বছরে গণমাধ্যমের অর্জন ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাজ্যে একটি ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে ১৬৭ বছরের পুরোনো পত্রিকা নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড, যেটি এক সময় বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক ছিল, সেটি বন্ধ হয়ে যায়। বিবিসিকে পৃথিবীর প্রথম সারির গণমাধ্যম হিসেবে ধরা হয়, সেখানে একজন এমপির বিরুদ্ধে অসত্য সংবাদ পরিবেশনের প্রেক্ষিতে মামলা হয়। সেজন্য বিবিসির প্রধান নির্বাহী থেকে শুরু করে পুরো টিমকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। কিন্তু অসত্য বা ভুল সংবাদ পরিবেশনের জন্য বাংলাদেশের কোনো সংবাদপত্র বন্ধ হয়নি।
যুক্তরাজ্যে প্রতিনিয়ত ভুল সংবাদ পরিবেশনের জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যমকে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়। আমাদের দেশে অসত্য সংবাদ, ভুল সংবাদ পরিবেশিত হয় না এটি কেউ বলতে পারবে না, প্রচুর হয়। কিন্তু এ অসত্য বা ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে কোনো সংবাদপত্র বন্ধ হয়েছে এমন ঘটনা ঘটেনি। মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে কোনো একজনের বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ পরিবেশন করা হলে প্রতিবাদটিও সমান গুরুত্বে ছাপা হওয়া এবং টিভিতে কোনো অসত্য প্রতিবেদন হলে তার প্রতিবাদও সমগুরুত্বের সাথে প্রচার হওয়ার বিষয়ে যত্নবান হওয়া আবশ্যক। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ আইন সারাদেশের সবার ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য।
কোনো সাংবাদিকের চরিত্রহরণ করে বা তার পরিবারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখা হলে তিনি কোন আইনের বলে প্রতিকার পাবেন? ডিজিটাল বিশ্ব যখন ছিল না তখন ডিজিটাল আইনের প্রয়োজনও ছিল না। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে এতো কথা হচ্ছে, ডিজিটাল আইনের মতো ভারতে ইনফরমেশন টেকনলজি অ্যাক্ট এবং সারাবিশ্বে এ বিষয়ে আইন রয়েছে। তবে আইনের যেন অপপ্রয়োগ না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখা আবশ্যক যাতে কেউ অহেতুক নিগৃহীত না হয়।
দেশে গণমাধ্যমের অর্জন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১২ বছর আগে বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ছিল সাড়ে ৪০০, এখন সাড়ে ১২০০। ১২ বছর আগে টেলিভিশনের সংখ্যা ছিল ১০টি, প্রাইভেট টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রথমবার দায়িত্ব গ্রহণের পর। এখন সমপ্রচারে আছে ৩৪টি টিভি চ্যানেল, আসার অপেক্ষায় আছে ১১টি।
অনলাইন গণমাধ্যম ১২ বছর আগে হাতে গোনা কয়েকটি ছিল। এখন কয়েকশ’ কিংবা কয় হাজার সেটি দেখার বিষয়। তবে আমাদের কাছে পাঁচ হাজার আবেদন জমা পড়েছে নিবন্ধনের জন্য। আমরা ইতোমধ্যেই কিছু নিবন্ধন দিয়েছি, আরও দেওয়া হবে, প্রক্রিয়া চলছে।
ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, শওকত মাহমুদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাদশা বক্তব্য রাখেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেসবুক লাইভে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে তরুণ গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধফোনালাপ, বন্ধুত্ব এরপর সর্বনাশ