নগরের এলইডি বাতি স্থাপন প্রকল্পের অনিয়ম খুঁজতে তদন্ত কমিটি করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এছাড়া নগরের ও আর নিজাম রোডের প্রবর্তক মোড় থেকে পাঁচলাইশ পর্যন্ত অংশে সৌন্দর্যবর্ধনের অনিয়ম খুঁজতে পৃথক আরেকটি কমিটি গঠন করা হবে।
গতকাল আন্দরকিল্লাস্থ নগর ভবনে কে.বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় এ তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। সভায় অক্সিজেন মোড়কে সিটি মেয়র ‘হযরত গাউসুল আজম মাইজ ভান্ডারী চত্বর’ নামকরণের প্রস্তাব দিলে তা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। এছাড়া লাভ লেইনস্থ আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ চত্বর ও দৈনিক আজাদীর সম্পাদক মরহুম অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ চত্ত্বরটি দৃষ্টি নন্দন করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করেন মেয়র। এছাড়া নগরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে জেলা চসিক, সিডিএ এবং জেলা প্রশাসন সমন্বয় সভা করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন মেয়র।
প্রসঙ্গত, দৈনিক আজাদীতে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর এবং চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদনে এলইডি বাতি প্রকল্পে অনিয়ম এর তথ্য তুলে ধরা হয়। অভিযোগ আছে, প্রকল্পের আওতায় নুতন পোল লাগানোর কথা থাকলেও পুরাতন মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি ‘সৌন্দর্যবর্ধন নাকি বাণিজ্য’ শিরোনামে প্রকাশিত অপর প্রতিবেদনে পাঁচলাইশস্থ শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে সৌন্দর্যবর্ধনের নামে পরিত্যক্ত জায়গায় চসিকের অনুমোদনে বাণিজ্যিকভাবে দুটি দোকান নির্মাণের তথ্য উঠে আসে। গতকাল অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় দুইজন কাউন্সিলর অভিযোগ করেন, পুরাতন পোল লাগানোর কারণে অনেক জায়গায় ভেঙে যাচ্ছে। এছাড়া শেভরনের সামনের দোকান থেকে চসিক আর্থিকভাবে লাভবান না হওয়ার কথা বলেন অন্য এক কউন্সিলর। এরপর বিষয়গুলো তদন্তে প্রধান নির্বাহীকে নির্দেশ দেন মেয়র।
সভায় মেয়র নগরীর আলোকায়ন বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখনো অনেক ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত আলোকায়ন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। নগরে চলমান মেগা প্রকল্পবর্হিভূত বাকি ২১টি খালের অবস্থান চিহ্নিত করার জন্য বর্তমান অবস্থার তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদন আকারে পেশ করার জন্য প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করেন মেয়র।
মেয়র আরো বলেন, সিডিএ আাগমী এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ভরাট হওয়া খাল-নালাগুলো পরিষ্কার করবে বলে কথা দিয়েছে। আশা করব, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা তাদের কথা রাখবে। যদি তারা ব্যর্থ হয় তাহলে চসিক কোনো অবস্থায় জলজট ও জলাবদ্ধতায় নগরবাসীর ভোগান্তি মেনে নিবে না। তিনি এপ্রিলের পর যে খালগুলো ভরাট করা হয়েছে তাতে গাইড ওয়ালের কাজ শেষ হোক বা না হোক তা পরিস্কার করে দিতে স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেন।
তিনি বলেন, চসিকের মূলত তিনটি কাজ- নগরীর পরিচ্ছন্নতা, আলোকায়ন ও রাস্তাঘাট সংস্কার। এজন্য নগরবাসী চসিককে কর প্রদান করে। তাই এই মৌলিক কাজগুলোতে কোনোরূপ অবহেলা করা চলবে না। যদি কোনোরূপ অবহেলা পরিলক্ষিত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে কোনো ধরনের অবহেলা হলে জোন প্রধানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন।
মেয়র সিটি কর্পোরেশনের যে যানবাহনগুলো আছে তার মধ্যে সচল, অচল এবং মেরামতযোগ্য যানবাহনের তালিকা প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়া সৌন্দর্যবর্ধনের নামে চুক্তি লক্সঘন করে যারা বিলবোর্ড ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে তাদের রির্পোট প্রস্তুত করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে প্রদানের নির্দেশ দেন।