তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘দেশে অনেক পত্রিকা আছে নিয়মিত বের হয় না। যেদিন ক্রোড়পত্র বা বিজ্ঞাপন পায়, সেদিন বের হয়। অথচ এগুলো ‘দৈনিক’ পত্রিকা হিসেবে নিবন্ধিত। এই পত্রিকাগুলোর উপস্থিতির ফলে যে পত্রিকাগুলো নিয়মিত বের হয় তাদের স্বার্থের হানি হয়। এবং অনিয়মিত বের হওয়া পত্রিকা দৈনিক পত্রিকা হতে পারে না। এটি নিয়ে আমি উদ্যোগ নিয়েছি, এজন্য অনেকেই আমার ওপর অসস্তুষ্ট। দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন যাওয়ার একটা প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হত, আমি অনেকটা সেটি কমাতে সক্ষম হয়েছি। আপনাদের দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে এটিকে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।’
সচিবালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সম্পাদক ফোরামের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে এ বিষয়ে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। বৈঠকের শুরুতে বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের পক্ষে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ও সংগঠনের উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। নাম সর্বস্ব ও অনিয়মিত প্রকাশিত পত্রিকায় সরকারি বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র প্রদান বন্ধ করে তাদের মিডিয়া তালিকাভুক্তি বাতিল করার দাবি রয়েছে এর মধ্যে। সম্পাদাক ফোরামের পক্ষ থেকে এই দাবি ওঠায় এখন তা বাস্তবায়ন করা ‘সহজ হবে’ বলে মত দেন তথ্যমন্ত্রী।
এদিকে করোনাভাইরাসের টিকা যথাসময়ে বাংলাদেশে আসায় বিএনপি উদভ্রান্তের মত প্রলাপ বকছে বলে দাবি করেছেন তথ্যমন্ত্রী।আগের দিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক অনুষ্ঠানে অভিযোগ করেন টিকা নিয়ে সরকার লুটপাট শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উপহার হিসেবে ভারত সরকার আমাদের টিকা দিয়েছে, এজন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। বিএনপির বক্তব্যটা ঠিক সে রকম- পাশের বাড়ির যাকে পছন্দ করে না বা যার সাথে তার ঝগড়া আছে, যখন তার ছেলে ডিগ্রি পাস করে বলে যে, পাস সঠিক না, পাস করলেও সার্টিফিকেট পাবে না, যখন সার্টিফিকেট পেল তখন বলে চাকরি পাবে না, চাকরি যখন পেল তখন বলে, বেতন পাবে না। বিএনপির বক্তব্যটা ঠিক সে রকম।’ খবর বিডিনিউজের।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারা আশা করেছিল দেশে প্রধানমন্ত্রী করোনা মহামারী সামাল দিতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেটি সামাল দিয়েছেন। শুধু তা নয়, বিশ্বব্যাপী তার এই নেতৃত্ব প্রশংশিত হয়েছে। ব্লুমবার্গ বলেছে, উপমহাদেশে করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতা সবার উপরে, পৃথিবীতে ২০তম। এই করোনার মধ্যে মাত্র ২২টি দেশে পজিটিভ জিডিপি গ্রোথ হয়েছে, এরমধ্যে বাংলাদেশ একটি এবং বাংলাদেশের অবস্থান জিডিপি গ্রোথ রেটের হার অনুযায়ী তৃতীয়। মূল কথা হচ্ছে- সরকারের এ সাফল্যে তারা উদভ্রান্ত হয়ে গেছে। এজন্য উদভ্রান্তের মত প্রলাপ বকছে।’
সম্পাদক ফোরামের সঙ্গে বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের সমস্ত ক্রোড়পত্র তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিতরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি বিজ্ঞাপন বাড়ানোর বিষয়েও পদক্ষেপ নেবেন। সরকারি বিজ্ঞাপনের বিল বিজ্ঞাপন প্রকাশের ছয় মাসের মধ্যে পাওয়া উচিত বলে মত দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে, আমরাও তাগিদপত্র দিয়েছিলাম, আমরা আবারও এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করব।’