রাউজান তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে থাকা পরিত্যক্ত জায়গায় ৪৩৮ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় নেয়া একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ থমকে গেছে। দেড় বছরের বেশি সময় আগে নেয়া এই প্রকল্প আদৌ বাস্তবায়ন করা হবে কিনা তাও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষের কেউ নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি।
জানা যায়, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড রাউজান ৪২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে থাকা বিশাল খালি জায়গায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছিল। পরিকল্পনায় ছিল প্রকল্পটি বাস্তাবায়ন করা হলে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়া বর্তমান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটে ব্যবহার করা গ্যাস দিয়ে নতুন প্রকল্পটি চালানোর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রকল্প গ্রহণের সময় তৎকালীন সরকারের সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে আলোচিত প্রকল্পটির প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছিল। প্রকল্প কাজের দরপত্র আহ্বান করে হয়েছিল ঠিকাদার নিয়োগ। সেই সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপনের কাজ পেয়েছিল চীনের সেপকো–থ্রি ইলেক্ট্রনিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশনস কোম্পানি লিমিটেড।
সূত্র মতে, ওই সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি দরপত্রের শর্ত পূরণ না করায় টেন্ডারদাতা প্রতিষ্ঠান সেই প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পাদিত চুক্তি বাতিল করে। পরে কর্তৃপক্ষ নতুন ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করেছিল। ওই টেন্ডার আহ্বানে সাড়া দেয়া ৭টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র কর্তৃপক্ষের মূল্যায়ন কমিটি যাচাই–বাছাই ও কারিগরি প্রস্তাব মূল্যায়ন করে প্রতিবেদন ও আর্থিক প্রস্তাব প্রতিবেদন দাখিল করেছিল। কর্তৃপক্ষের মতে এই মূল্যায়নে সিএনটিআইসি–সিএমসি কনসোর্টিয়াম, চায়না সর্বনিম্ন দরদাতা বিবেচিত হয়েছিল। পরে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে প্রকল্পটি নিয়ে আর এগুতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে প্রকল্প কাজ থমকে আছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রকল্পটি নির্মাণের মাধ্যমে মডার্ণ টেকনোলজি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা ছিল। পিডিবির কর্মকর্তাদের দাবি আধুনিক প্রযুক্তির ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা গেলে গ্যাস সাশ্রয়ের পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয় অনেকাংশে কমে আসতো।
সূত্র মতে, নতুন প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ধরা ছিল দুই হাজার ৮৭ কোটি টাকা। শুধুমাত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ব্যয় ধরা ছিল ১৮শ’ কোটি টাকা।
এই প্রকল্পের ভবিষৎ নিয়ে জানতে চাইলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলেন, আপাততঃ প্রকল্পটি নিয়ে তেমন সুখবর নেই। আগে ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যেই অবস্থানে ছিল, সেই অবস্থায় থমকে আছে। তবে তিনি জানান, কিছু দিন আগে মন্ত্রণালয় থেকে একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করে গেছেন। তিনি নতুন প্রকল্পটির খবররাখবর নিয়ে গেছেন। এই প্রকল্পটি নিয়ে তিনি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন।