অনিশ্চয়তা দূর হয়নি অর্থ সংস্থানে

জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প সংকট কাটবে এই আশায় ৯ খালে শুরু হচ্ছে কাজ

মোরশেদ তালুকদার | মঙ্গলবার , ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৫:১১ পূর্বাহ্ণ

নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করে সংশোধিত ডিপিপি প্রস্তাব করা হয় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে। এতে প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধিরও প্রস্তাব ছিল। সংশোধিত ডিপিপি এখনো অনুমোদন দেয়নি একনেক। এরিমধ্যে গত জুন মাসে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাই চলতি অর্থ বছরে প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ থাকা ৫৮০ কোটি টাকা ছাড় করছে না মন্ত্রণালয়। অথচ এ পর্যন্ত প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৮৬ শতাংশ। এ অবস্থায় অর্থ বরাদ্দ না পেলে থমকে যেতে পারে প্রকল্পের বাকি কাজ।

অবশ্য সৃষ্ট সংকট দূর হবে এমন আশায় প্রকল্পভুক্ত ৯ খালে চলতি মাসেই রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ শুরু করতে যাচ্ছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনী। খালগুলো হচ্ছেমহেশখাল, মহেশখালী খাল, নাসির খাল, চশমা খাল, বাকলিয়া খাল, বামনশাহী খাল, রাজাখালী খাল, বদরখালী খাল এবং ১৫ নং ঘাট সংলগ্ন খাল। ৯ খালের খালে কাজ শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী আজাদীকে বলেন, আশা করছি সিডিএ অর্থের ব্যবস্থা করবে। তাই ঠিকাদারদের বলে কাজ শুরু করে দিচ্ছি। বরাদ্দ পেলে তাদের পেমেন্ট করব। তবে শেষ পর্যন্ত অর্থ বরাদ্দ না পেলে কিছুটা জটিলতা হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আমার প্লান আছে চাক্তাই ও চাক্তাই ডাইভার্শন খালের সম্পূর্ণ খনন ও খালের পাড়ে রাস্তার নির্মাণ কাজ এ বছর শেষ করব। কিন্তু বরাদ্দ না পেলে তো পারা যাবে না।

জানা গেছে, পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকায় ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সমপ্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক সিডিএ’র মেগা প্রকল্প অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট। ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সিডিএর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছিল। পরবর্তীতে নানা প্রক্রিয়া শেষে একই বছরের ২৮ এপ্রিল নগরীর চশমা খাল ছাড়াও মুরাদপুর এলাকার সুন্নিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন খাল ও বহদ্দারহাট মোড়ের বড় নালা পরিষ্কার করার মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল।

শুরুতে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। এ সময়ে প্রকল্পের বিপরীতে মন্ত্রণালয় ছাড় করে ৩ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা। এদিকে ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের আকার বৃদ্ধি করে ১০ হাজার ৪২০ কোটি টাকার সংশোদিত ডিপিপি প্রস্তাব করে সিডিএ। তবে ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি প্রস্তাবিত ব্যয় কমিয়ে ৮ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা নির্ধারণ করে। পরবর্তীতে অনুমোদনের জন্য অর্থ বিভাগে পাঠানো হলে বর্ধিত ৩ হাজার ১২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। শেষে বর্ধিত অর্থের ৫০ শতাংশ সিডিএ’র নিজস্ব তহবিল থেকে এবং বাকি টাকা ২০ বছর মেয়াদে সরকার থেকে ঋণ নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের শর্তে অনুমোদন দেয়। পরবর্তীতে গত মে মাসে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ অর্থ সরকারি তহবিল থেকে দেয়ার জন্য অর্থ বিভাগে চিঠি দিলেও কোনো সাড়া মিলেনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিশুটি গেল কোথায়
পরবর্তী নিবন্ধঅপহরণের ৭২ ঘণ্টা পর ডাকাতের আস্তানা থেকে ৩ বনকর্মী উদ্ধার