অনাবাদী আরও ৫৭১ হেক্টর জমি আসছে চাষের আওতায়

পটিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ৭ মার্চ, ২০২২ at ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ

পটিয়ায় কৃষি বিভাগের নানামুখী তৎপরতায় অনাবাদী জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই সফলতা পেতে শুরু করেছে কৃষক ও পটিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার পৌর এলাকা, কেলিশহর, জঙ্গলখাইন, শোভনদন্ডীসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০২১ হেক্টর অনাবাদী জমি ছিল। এর মধ্যে কৃষি বিভাগের পরিকল্পিত উদ্যোগের ফলে গত দুই বছরেই ৪৫০ হেক্টর জমি চাষাবাদের আওতায় এসেছে। এসব জমির মধ্যে ধান চাষ, অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে কচু চাষ এবং অন্যান্য কৃষি জমিতে সবজি চাষ করা হচ্ছে।
এদিকে কৃষকদের বিশেষ সহায়তা ও অনাবাদী জমিকে চাষের আওতায় আনতে জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী স্থানীয় কৃষকদের জন্য ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য ভুর্তুকি দিয়ে হারভেস্টর মেশিন সহায়তা দিয়েছেন। এছাড়া উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় অনাবাদী জমিতে বিএডিসির ট্রাক্টর দিয়ে কৃষকদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তাদের অনাবাদী জমিতে চাষের সুযোগ করে দেয়। এভাবে ৪৫০ হেক্টর অনাবাদী জমিতে চাষ শুরু করা হয়। এ উদ্যোগের মাধ্যমে শতভাগ অনাবাদী জমি কৃষির আওতায় আনার প্রক্রিয়াও চলছে বলে জানা গেছে। পটিয়া কৃষি অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, উপজেলার কেলিশহরে সেচ সমস্যা ছিল। একটি বাঁধের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বেশ কিছু জমিতে চাষাবাদ হচ্ছিল না। বর্তমানে বাঁধ কেটে সেচের ব্যবস্থা করায় সেখানে পুরোদমে এখন চাষাবাদ শুরু হয়েছে। উপজেলায় ১০২১ হেক্টর অনাবাদী জমিতে চাষাবাদ শুরু করতে পারলে ৭-৮ হাজার মানুষ এর সুফল ভোগ করবে। এছাড়া বর্তমানে ৪৫০ হেক্টর অনাবাদী জমি চাষের আওতায় আসায় আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ এর সুফল ভোগ করছে।
জানা গেছে, অনাবাদী জমিতে চাষাবাদ শুরু করার জন্য হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি নির্দেশনা দেন। এরপর গত দুই বছর ধরে পটিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কল্পনা রহমানের নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ে জরিপ শুরু করা হয়। জরিপে সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় মাঠ পর্যায়ে অনাবাদী জমির তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এ জরিপ কাজে অনাবাদী জমির পরিমাণ, জমির প্রকার বা অবস্থান, কৃষি ও কৃষকের সমস্যা, কৃষক এবং জমির মালিকানাসহ নানা বিষয় উঠে আসে।
সেচ ব্যবস্থার সমস্যা, অন্য পেশায় আগ্রহসহ নানা কারণে কৃষক চাষবাদ বিমুখ ছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ এর অদ্যবধি প্রায় ৪৫০ হেক্টর অনাবাদি জমি চাষের আওতায় এসেছে। মূলত পটিয়া পৌরসভা, কেলিশহর, জঙ্গলখাইন, শোভনদন্ডী ইউনিয়নে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করন, ট্রেনিং, সেচের সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে মূলত এটি সম্ভব হয়। এ প্রক্রিয়ায় চলমান রয়েছে, ফলে অনাবাদী জমিকে শতভাগ চাষের আওতায় আনার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
পটিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কল্পনা রহমান জানান, অনাবাদী জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এর মাধ্যমে আশাকরি অল্প সময়ের মধ্যে সব অনাবাদী জমি চাষাবাদের আওতায় চলে আসবে। এর জন্য আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ, মাঠ সমাবেশ, বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ ও ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছি। সরকার কৃষি উন্নয়নে নানামুখী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মাঠ পর্যায়ে এসব প্রদক্ষেপ বাস্তবায়নে পটিয়ায় সকল কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএতিমখানার টাকা আত্মসাৎ মামলায় গারাংগিয়া মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কারাগারে
পরবর্তী নিবন্ধমহীয়সী এক নারীকে আবিষ্কারের চেষ্টা