চট্টগ্রাম কাস্টমসে বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্সসহ ৪৭ লট পণ্য অনলাইন নিলামে (ই অকশন) তোলা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে অনলাইনে দরপত্র জমা নেওয়া শুরু হয়েছে। দরপত্র জমা দেওয়া যাবে আগামী ১২ জানুযারি বিকাল ৫টা পর্যন্ত। এছাড়া আগ্রহী বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) আজ ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সরাসরি পণ্য দেখার সুযোগ পাবেন।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, ৪৭ লট পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্স, প্লাস্টিক ম্যাটেরিয়াল, উড ফ্রি পেপার, ডুপ্লেক্স পেপার বোর্ড ওয়ান সাইড কোটেড উইথ গ্রে ব্যাক, পলিম্যাক্স পিপি পলিপ্রোপাইলিন, নিউ টায়ার উইথ টিউব, ফায়ার রেসিসটেন্ট ডাবল ডোর স্টিল, মার্বেল ব্লক, স্টিকার প্রিন্টেড, পেইন্টিং ফেব্রিক্স, ডেনিম ফেব্রিক্স কম্পোজিশন, সোডিয়াম সালফেট, ডার্ক গ্রিন রিফ্লেক্টিভ গ্লাস, উড ফ্রি পেপার, এনিম্যাল ফিড প্রিমিক্স, লিকুইড ফ্লো ম্যাজারিং ইন্সট্রুমেন্ট, শকস নিটিং মেশিন ও অ্যাডহেসিভ পেপার। জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৭ ও ২৮ অক্টোবর ১৬ লট বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিলামে তোলার মাধ্যমে ই–অকশনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৯ ও ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ২০ লট পেঁয়াজ নিলামে তোলা হয়। একই বছরের ৩ ও ৪ নভেম্বর কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১১২ লট গাড়ি তোলা হয়।
দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের ১২ ও ১৩ জুন কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা ১০৮টি গাড়ি পুনরায় নিলামে তুলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ওই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ৭৮ লট কার্নেট গাড়ি নিলামে তোলা হয়। এছাড়া ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন ধরনের ২৩ লট পণ্য এবং গত ৩১ ডিসেম্বর ১০৮ লট পণ্য ই–অকশনে তোলা হয়।
চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন ধরনের ৭৯ লট পণ্য নিলামে তোলা হয়। ১৬ মে নিলামে তোলা হয় ৯০ লট পণ্য। ২৬ জুন নিলামে তোলা হয় ৬২ লট পণ্য। ১৮ সেপ্টেম্বর তোলা হয় ৪৬ লট পণ্য, ৫ নভেম্বর তোলা হয়েছে ৪৫ লট পণ্য এবং সর্বশেষ ১২ ডিসেম্বর তোলা হয়েছে ৪৯ লট পণ্য।
বিডাররা বলছেন, অনলাইন নিলামে এখনো অনেক বিডার অভ্যস্ত হতে পারেননি। এছাড়া অলনাইন নিলামের অনেকগুলো কাজ এখনো ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে করতে হচ্ছে। শুধুমাত্র দরপত্র জমাটা অনলাইনে হচ্ছে। তাই অনলাইন নিলামের পাশাপাশি যদি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেও নিলাম আয়োজন করা হয়, বিডাররা উপকৃত হবেন।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কেএম কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোরশেদ জানান, চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আগামী ১২ জানুয়ারি ৪৭ লট পণ্য তোলা হচ্ছে। একইসাথে বর্তমানে বিভিন্ন নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংসের কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ–কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, বন্দরের ইয়ার্ড খালি করার জন্য আমদানিকারক কর্তৃক অখালাসকৃত পণ্য আমরা নিলামে বিক্রি করছি। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে নিলাম কার্যক্রমের গতি বাড়িয়েছি। এরই অংশ হিসেবে এবার ৪৭ লট পণ্য অনলাইন নিলামে তোলা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এ সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেওয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।