অনলাইন গেমের ভয়াল থাবা থেকে তরুণ সমাজকে বাঁচাতে হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
এ সময় তিনি বলেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষের স্মার্ট ডিভাইসের ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে অনলাইন গেমের সহজলভ্যতা। করোনা মহামারী ও লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ, লেখাপড়ার চাপ কম থাকা এবং বাইরে খেলাধুলার সুযোগ না থাকায় মোবাইলের ওপর আসক্ত হয়ে পড়েছে বেশিরভাগ তরুণ-তরুণী। ফলে অনলাইন গেমের ওপর প্রবলভাবে ঝুঁকে পড়ছে তারা। ইন্টারনেট ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অনলাইন গেমের প্রচার ও প্রসার। আর অনলাইন গেমগুলোকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তোলার কারণে এতে মারাত্মকভাবে আসক্ত হচ্ছে তরুণ সমাজ। দীর্ঘ সময় ধরে অনলাইন গেম খেলার ফলে তাদের পর্যাপ্ত খাওয়া দাওয়া এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে। এতে তারা মানসিক অবসাদে ডুবে যাচ্ছে আর এর ক্ষতিকর প্রভাব সরাসরি পড়ছে তাদের শরীর ও মনে। ফলে প্রতিটি অভিভাবক আতংকে রয়েছে। অনলাইন গেমের পাশাপাশি ইন্টারনেটে তারা বিভিন্ন ধরনের খারাপ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করছে। এতে করে তাদের নৈতিকতাও হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি। ইতিমধ্যে অনলাইন গেমের আসক্তিকে সম্প্রতি ‘মানসিক রোগের’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অনলাইন গেমে তরুণ-তরুণীরা যেভাবে আসক্ত হচ্ছে ভবিষ্যতে তাদের শিক্ষাজীবনে মনোনিবেশ করা কঠিন হয়ে যাবে। যেকোন ভাবে অনলাইন গেমের ভয়াল থাবা থেকে তরুণ-তরুণীদের রক্ষা করতে হবে নচেৎ আগামীর একটি সুন্দর জ্ঞাননির্ভর প্রজন্মের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। এছাড়া অলি গলিতে ছড়িয়ে পড়া অনলাইন জুয়াও জনমনে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করছে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। অনলাইন জুয়া নিয়ে নগরীতে বিভিন্ন ধরণের বেআইনি কর্মকান্ডও পরিচালিত হচ্ছে। তরুণ সমাজ জেনে বা না জেনে ভয়ংকর এ ফাঁদে পা দিচ্ছে। ফলে মুহূর্তের মধ্যেই ধুলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে একটি পরিবারের সুন্দর স্বপ্ন। তাই এ ভয়াবহ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বুদ্ধিদীপ্ত উদ্যোগ গ্রহণ এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তরুণ সমাজকেও অনলাইনে শিক্ষণীয় জ্ঞান বিজ্ঞান বিষয়ক ভালো বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বদানের আহবান জানান তিনি। এতে তাদের শিক্ষাজীবন আলোয় ভরে উঠবে ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সুজন। সকল স্কুল কলেজসমূহে অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কঠোর মনিটরিং করারও অনুরোধ জানান তিনি। তিনি যে কোন মূল্যে অনলাইন গেমকে বন্ধ করতে সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করার আহবান জানান। এছাড়া তরুণ সমাজকে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষামূলক খেলাধুলা, ছবি, নাটক ও গানসহ সুস্থ বিনোদন উপহার দেয়ার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।