অধ্যাপক খালেদ ছিলেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও অনুকরণীয়

স্মারকগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৭ মে, ২০২৩ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ ছিলেন প্রজ্বলিত আলোকশিখা। তাঁর জন্মই হয়েছে এ সমাজকে, সমাজের মানুষগুলোকে আলোকিত করার জন্য। তিনি ছিলেন বহু গুণে গুণান্বিত এক ব্যক্তিত্ব। তিনি অধ্যাপনা করেছেন, রাজনীতি করেছেন, সাংবাদিকতা করেছেন। তবে সবচেয়ে বড় কথা তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। নিজেকে একটি অনুকরণীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিলেন। তাঁকে বলা হয় বিবেকের বাতিঘর। তিনি ছিলেন জাগ্রত বিবেক। তাঁর বিবেক আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছিল। দীর্ঘ কর্মময় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি নৈতিকতা ও আদর্শের কারণে সফল হয়েছেন। অবহেলিত চট্টগ্রামের উন্নয়ন এবং এ জনপদে আলোকিত মানুষ সৃষ্টিতে দৈনিক আজাদী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক অতুলনীয় দূরদর্শিতা দেখিয়েছিলেন। আর তাঁর দেখানো পথ ধরে প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ করেছেন আজাদীকে। তিনি কথা বলতেন দৃঢ়ভাবে, যার সাথে কাজের সমন্বয় থাকত। অত্যন্ত বিনয়ী ছিলেন বলেই তিনি কাউকে ফিরিয়ে দিতেন না। তিনি আজীবন সমাজের জন্য, মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কিছু অংশও যদি আমরা নিজেদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারি, তবেই এ ধরনের আয়োজন সার্থক হয়ে উঠবে। গতকাল শনিবার ‘চেতনার বাতিঘর অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ স্মারকগ্রন্থ’ প্রকাশনা উৎসবে আলোচকবৃন্দ এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ ছিলেন আমার রাজনৈতিক পথপ্রদর্শক। বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বরণের পর চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল উল্লেখ করার মতো। আমি যাতে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারি, সে বিষয়ে তিনি সহযোগিতা করেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাঁর স্মৃতি অমলিন থাকবে। তিনি বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ ছিলেন চিত্তের পূজারী। অতি সাধারণ জীবনযাপনের মাধ্যমে দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে ছিলেন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব এবং অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। কর্মের মাধ্যমে তিনি আজীবন সবার হৃদয়ে চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহ্‌উদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ যখন সত্তরের নির্বাচনে প্রতাপশালী ফজলুল কাদের চৌধুরীকে পরাজিত করেছিলেন, তখন সারা পাকিস্তানের মানুষ তাঁকে চিনেছেন। তিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সর্বোপরি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতাদের অন্যতম। সর্বজন শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদকে চট্টগ্রামের মানুষ চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবেন।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদ উল আলম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আলী আব্বাস, ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি কবিসাংবাদিক রাশেদ রউফ, মীরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন, ক্লাবের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদুল আলম শামীম, সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান এবং অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের ছেলে মোহাম্মদ জহির।

প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহ্‌উদ্দিন মো. রেজা বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ তাঁর সততা, মেধা, জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে সবকিছু জয় করেছেন। যেখানে গিয়েছেন সেখানেই অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। তিনি আমাদেরও বাতিঘর। একজন পরিপূর্ণ মানুষের যা যা গুণ থাকা প্রয়োজন তিনি সেইসব গুণের অধিকারী ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। এ সময় প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি মনজুর কাদের মনজু, অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, ক্রীড়া সম্পাদক এম সরোয়ারুল আলম সোহেল, গ্রন্থাগার সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক আল রাহমান এবং কার্যকরী সদস্য মো. আইয়ুব আলী উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বের প্রশংসায় মাথা খারাপ হয়ে গেছে বিএনপি নেতাদের : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধচমেক হাসপাতালে হজ যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু আজ