অধ্যাপক খালেদ ছিলেন গুণী ব্যক্তিত্ব

নাগরিক উদ্যোগের স্মরণসভায় বক্তারা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২১ ডিসেম্বর, ২০২০ at ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সাংবাদিক, দৈনিক আজাদীর প্রাক্তন সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের নাগরিক স্মরণ সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘অধ্যাপক খালেদ কঠিনভাবে জীবনযাপন করতেন। তাঁর বিষয়ে বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে পরিপূর্ণভাবে জানতে হবে। গুণী ব্যক্তি ছিলেন অধ্যাপক খালেদ। তাঁর জীবন আচার অনুসরণ করলে জানা যাবে, প্রকৃত গুণী কাকে বলে, সৎ ও সত্য, ন্যায়নিষ্ট সাংবাদিক কাকে বলে।’
গতকাল রোববার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। নাগরিক উদ্যোগের আহবায়ক ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য রিয়াজ হায়দার চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন।
বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও আজাদীর সাথে অধ্যাপক খালেদের সম্পর্কের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, কলকাতার ইসলামি কলেজে ভর্তি হলে তাঁর জীবনের মোড় ঘুরে যায়। ওখানেই বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে আসার সুযোগ হয় অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের। ১৯৬০ সালে আজাদী প্রকাশ শুরু হলেও উনার শ্বশুর ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেকের মৃত্যুর পর ৬২ সালে তিনি আজাদীর দায়িত্ব নেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ যখন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, সেই ঘোষণার সাথে অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ সংশ্লিষ্ট ছিলেন। মার্চ মাসে অসহযোগ আন্দোলনকালে সংবিধান প্রণয়নের জন্য হোটেল পূর্বাণীতে মিটিং ডেকেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই মিটিংয়েও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক খালেদ। উনি ছিলেন সংবিধান প্রণেতাদের অন্যতম। ২০০৩ সালের ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি আমৃত্যু আজাদীর সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।’
অধ্যাপক খালেদ ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেকের স্নেহধন্য ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কলকাতায় তাঁর লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছেন তাঁরই অভিভাবক ও মামা ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক, যিনি এতদঞ্চলের অনগ্রসর মুসলমানদের অসাম্প্রদায়িক চেতনাতে এগিয়ে নিতে কোহিনুর পত্রিকা, কোহিনুর প্রেস চালু করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের কবিতা ছাপানো হয়েছিল এই কোহিনুর প্রেসেই। যে কারণে ওই সময়ে কোহিনুর প্রেস বন্ধ করে দেয় সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর দেশের অন্যকোন পত্রিকা বের না হলেও “জয় বাংলা, বাংলার জয়” শিরোনামে দৈনিক আজাদী ছাপা হয়। যে কারণে স্বাধীনতার প্রথম দৈনিক হিসেবে পরিচিতি পায় দৈনিক আজাদী।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন মুক্তিযোদ্ধা গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান। অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের পরিবারের পক্ষে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন তাঁর পুত্র ও স্লোগান সম্পাদক মোহাম্মদ জহির। আলোচক ছিলেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী, প্রফেসর ড. সেকান্দর চৌধুরী।
বক্তব্য রাখেন সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, সাবরিনা চৌধুরী, দৈনিক আজাদীর রিপোর্টার ইকবাল হোসেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইয়াসির আরাফাত প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শিল্পী তৈয়বা জহির আরশি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’
পরবর্তী নিবন্ধসিনহা হত্যা মামলার চার্জশিট গ্রহণ, সিফাতকে অব্যাহতি