চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজে ছাত্রলীগ নেতার হাতে এক অধ্যাপক লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর রনজিত কুমার দত্তের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কলেজের আরেক কর্মচারীও গুরুতর আহত হন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. আবদুল খালেক জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কলেজের সেমিনার কক্ষে অনার্স ১ম বর্ষের রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও অনার্স ৪র্থ বর্ষের এডমিট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম চলছিল। কলেজের অফিস সহায়ক প্রযুক্তা পাল সেমিনার কক্ষে এ কার্ডগুলো বিতরণ করছিলেন। এসময় কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাফাতুন নুর চৌধুরী এসে রুমের নষ্ট ফ্যান ঠিক করাতে বলেন। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. একেএম আতিকুর রহমান কলেজ কর্তৃপক্ষ পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানালে সাফাতুন নুর চৌধুরী ক্ষুব্ধ হয়ে হাতে রড নিয়ে ফ্যান ভেঙে ফেলতে উদ্যত হলে হাতের রড গিয়ে পড়ে অফিস সহায়ক প্রযুক্তা পালের মাথায়। তাকে উদ্ধার করে চন্দনাইশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ঘটনার ২০ মিনিট পর সাফাতুন নুর অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকেন। এ সময় অধ্যাপক ড. একেএম আতিকুর রহমান অধ্যক্ষের রুমে ছিলেন। তিনি বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানান এবং থানায় অভিযোগ দিতে বলেন। এসময় ছাত্রলীগ নেতা সাফাতুন নুর ক্ষিপ্ত হয়ে বাকবিতন্ডায় জড়ান ও একপর্যায়ে অধ্যাপক ড. একেএম আতিকুর রহমানের মুখে ঘুষি মারেন। পরে এ ঘটনায় অধ্যাপক ড. একেএম আতিকুর রহমান চন্দনাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে এবং অধ্যক্ষের সামনে এ রকম ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক। এটা আমাদের জন্য অশনি সংকেত।’
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা সাফাতুন নুর চৌধুরী বলেন, ‘অনার্স ১ম বর্ষের ভর্তি ফি পটিয়াসহ পাশাপাশি অন্যান্য কলেজ থেকে বেশি নেয়া হচ্ছে বলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাকে জানায়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্র নেতা হিসেবে ঘটনাটি জানার জন্য অধ্যক্ষের রুমে যাই এবং সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভর্তি ফি নেয়ার অনুরোধ করি।’ এসময় অধ্যাপককে লাঞ্ছিত করার ঘটনা তিনি অস্বীকার করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ বাড়তি ফি নেয়ার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক রনজিত কুমার দত্ত বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা প্রতিটি বিভাগের প্রভাষক ও অধ্যাপকদের নিয়ে মিটিংয়ের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
চন্দনাইশ থানার ওসি (তদন্ত) যুযুৎসু যশ চাকমা জানান, এ ঘটনায় কলেজের অধ্যাপক ড. একেএম আতিকুর রহমান একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।