অধীনস্থের প্রতি ব্যবহার হোক ন্যায় সঙ্গত

মোহাম্মদ ওয়াহিদ মিরাজ | মঙ্গলবার , ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ at ৮:১২ পূর্বাহ্ণ

আমরা প্রত্যেকেই অন্যের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হই আবার নিজে নিয়ন্ত্রণকারীর ভূমিকায়ও অবতীর্ণ হই। এটিই হলো সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন মানুষের ধর্ম। আমার মনে হয় এমন কোন মানুষ নেই যিনি নিজে নিয়ন্ত্রণকারী নন, আবার অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নন। বিষয়টি একটি ছোট্ট উদাহরণের মাধ্যমে এভাবে বলা যায় যে, একটি রাষ্ট্রের প্রধান যেমন দেশের সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত থেকে দেশকে নিয়ন্ত্রণ করেন ঠিক তেমনি রাষ্ট্রের জনগণ কর্তৃক তিনিও সময়ে সময়ে নিয়ন্ত্রিত হন। তবে নিয়ন্ত্রণকারী যদি নিজেকেই নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হন বা নেতৃত্বের অহংকারে অধীনস্থের প্রতি অন্যায়অনাচার করেন তাহলেই শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের অশান্তি। কিছু কিছু অফিসে এমন অনেক নিয়ন্ত্রণকারী রয়েছেন যে বা যারা তার অধীনস্থেরও যে কর্মক্ষেত্রে বা সমাজে সম্মান আছে তা বুঝতে চান না, ফলে ভুল বুঝে মিথ্যা দোষ চাপিয়ে দিয়ে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে উপস্থিত অনেকের সম্মুখে তার প্রতি দুর্ব্যবহার করেন। অনেক সময় অধীনস্থের প্রতি এমন মন্দ ব্যবহারের কারণও খোঁজে পাওয়া যায় না। পরবর্তীতে প্রমাণিতও হয় যে, ভুলটি ছিল নিয়ন্ত্রণকারীর, অধীনস্থের নয়। তথাপি নিয়ন্ত্রণকারীর দ্বারা অন্যায় ভাবে ভবিষ্যতে আরো হেনস্থা হওয়ার ভয়ে তাকে কিছুই বলা যায় না।

প্রায় সময়ে পরিলক্ষিত হয় যে, অন্যের সঙ্গে মনোমালিন্য বা তার ঊর্ধ্বতন বসের নিকট নিজের ভুলের কারণে অপমানিত হওয়ার ফলে সে রাগ তার অধীনস্থের প্রতি ঝাড়া হয়, যা কোন ভাবেই যুক্তিসংগত নয় বা কাম্য হতে পারে না। এ সময়ে অধীনস্থকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগও দেয়া হয় না, বরং অধীনস্থ প্রতিবাদ করলে তাকে অকল্পনীয় ভাবে অন্যায় পন্থায় আরো বেশি হেনস্থা করা হয়।

তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমও লক্ষ্য করা যায়। প্রকৃত ভুল করা বা দোষী ব্যক্তিকেও সাদা মনের অনেক নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃক প্রথম অবস্থায় ক্ষমা করে দিয়ে তাকে সংশোধনের সুযোগ করে দেয়া হয়। প্রকৃত ভালো মানুষগণ এ থেকে সুশিক্ষা গ্রহণপূর্বক সারাজীবনের জন্য সংশোধিত হয়ে যায়। তবে আমাদের বুঝতে হবে, যুক্তি সংগত কারণ ব্যতীত যার অন্যায় ব্যবহারে অন্যের মনে কষ্ট হয় তিনি কখনও ভালো মানুষ হতে পারেন না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমনের খোরাক
পরবর্তী নিবন্ধস্ট্রোকের পর ফিজিওথেরাপি কেন অপরিহার্য