কক্সবাজার শহর ও সাগরপাড়ে ৫ শতাধিক আবাসিক হোটেল ও ২ শতাধিক রেস্তোরাঁ রয়েছে। এর অধিকাংশতে নেই যথাযথ অগ্নি–নির্বাপণ ব্যবস্থা। এমনকি সাগরপাড়ের অনেকগুলো তারকা হোটেলের অগ্নি–নির্বাপণ ব্যবস্থাও ত্রুটিপূর্ণ। কয়েকদিন আগে রাজধানী ঢাকায় মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের পর গতকাল মঙ্গলবার কক্সবাজার শহরের হোটেল–মোটেল জোনে অভিযান চালিয়ে এ অবস্থা প্রত্যক্ষ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত পরিচালিত এ অভিযানে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৮১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে থাকা কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম ) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, পর্যটন শহর কঙবাজারকে অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনা থেকে নিরাপদ ও পর্যটকদের ভ্রমণকে নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসনের দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে দুইটি দল হোটেল–মোটেল জোনে অভিযান পরিচালনা করে। এতে আবাসিক হোটেলগুলোতে অগ্নি–নির্বাপন ব্যবস্থা যথাযথভাবে অনুসরণ না করা এবং খাবার রেস্তোরাঁয় মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করাসহ নিরাপদ খাদ্য পরিবেশনে ব্যত্যয়ের দায়ে ৭টি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ৮১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার শহর ও পর্যটন এলাকার অধিকাংশ হোটেল–রেস্তোরাঁয় অগ্নি–প্রতিরোধক দরজার বিপরীতে কাঠের দরজা নেই। এছাড়া স্মোক ডিটেক্টর বা ধোঁয়া শনাক্তকারী, পর্যাপ্ত ফায়ার এঙটিংগুইশার এবং হোটেলের আয়তন অনুপাতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। ফলে শহরের অধিকাংশ আবাসিক হোটেল রয়েছে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে।
ঘটনার কথা স্বীকার করে কঙবাজার দমকল স্টেশনের উপ–সহকারী পরিচালক অসিত চাকমা বলেন, কঙবাজার শহর ও পর্যটন এলাকার অধিকাংশ হোটেল যথাযথভাবে অগ্নি–নির্বাপণ ব্যবস্থা প্রতিপালন করছে না। ফলে এসব হোটেল অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিমুক্ত নয়।
কঙবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, মঙ্গলবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা আদায় করা প্রতিষ্ঠানে অগ্নি–প্রতিরোধক দরজার বিপরীতে কাঠের দরজা, অকেজো স্মোক ডিডেক্টর, অপর্যাপ্ত ফায়ার এঙটিংগুইশার এবং হোটেলের আয়তন অনুপাতে অপর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা দেখা গেছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর চূড়ান্ত সনদ না থাকা এবং খাবার রেস্তোরাঁগুলোতে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য পরিবেশনে ত্রুটির প্রমাণ মিলেছে। এসব অভিযোগে অভিজাত হোটেল লং বিচকে ১ লাখ টাকা, হোটেল সী প্যালেসকে ৫০ হাজার টাকা, হোটেল কল্লোলকে ৫০ হাজার টাকা, হোটেল মিডিয়াকে ১০ হাজার টাকা, কাচ্চি ডাইন রেস্তোরাঁকে ২০ হাজার এবং হোটেল মিডিয়ার রেস্তোরাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া হোটেল মিডিয়ার পাশে অনুমোদনহীন একটি ছোট দোকানকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ইয়ামিন জানান, দন্ডপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা আদায় করার পাশাপাশি ত্রুটিগুলো দ্রুত সারিয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের এ অভিযান আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।