অনেক প্রত্যাশা নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও প্রথম পর্বের শুরুটা হয়েছিল হার দিয়ে। তারপরও শেষ দুই ম্যাচ জিতে টাইগাররা জায়গা করে নিয়েছিল সুপার টুয়েলভ পর্বে। বিশ্বকাপের আসল মঞ্চে এসে বাংলাদেশ পরিণত হয় অচেনা এক দলে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু করা টাইগাররা আজ বিশ্বকাপের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে। টানা চার ম্যাচে হেরে বিশ্বকাপ শেষ মাহমুদউল্লাহদের। আজ কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তি ঘোষণা করা। প্রথম তিন ম্যাচের অন্তত দুটিতে জয়ের অবস্থায় থাকা বাংলাদেশ চতুর্থ ম্যাচে হারিয়েছে শেষ সম্ভ্রমও। আজ কি অপেক্ষা করছে সেটাই বলা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ম্যাচের পর ম্যাচ পারফরম্যান্সের পারদ কেবল নিচে নামতে থাকা বাংলাদেশ যে আজ খুব বেশি কিছু করতে পারবে তেমনটা ভাবা হবে চরম বোকামি। কারণ আজকের ম্যাচে টাইগারদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। যারা অপেক্ষায় রয়েছে সেমিফাইনালে খেলার। এরই মধ্যে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে কিছুটা হলেও চাপে রয়েছে অসিরা। তাই বাংলাদেশকে যে আজ কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে সেটা নিশ্চিত।
যদিও বিশ্বকাপের আগে নিজেদের মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সে দলে ছিল না অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান দলের সাতজন ক্রিকেটার। তার উপর নিজেদের মাঠেই যে বাংলাদেশ কেবল বাঘ সেটা প্রমাণিত হয়ে গেছে এরই মধ্যে। দলে নেই সাকিব আল হাসান। তার অভাবটা আগের ম্যাচেই বেশ ভালভাবে টের পেয়েছে বাংলাদেশ। কাজেই এই যখন হতশ্রী অবস্থা ঠিক তখন বাংলাদেশকে নামতে হচ্ছে পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আর হারাবার কিছু নেই। পাওয়ারও তেমন কিছু নেই। কারণ প্রতিপক্ষের শক্তি বিবেচনায় এই ম্যাচে কিছু পাওয়ার আশা করাটা যে বোকামি। তবে টাইগারদের সামনে একটা সুযোগ রয়েছে। তা হচ্ছে অল আউট খেলা। হারাবার যখন আর কিছু নেই তখন কিছু একটা পাওয়ার চেষ্টা করা। শেষটা যদি কোনভাবে রাঙানো যায় তাহলে মন্দ হয় না। সোনার হরিণ হয়ে থাকা একটা জয় যদি আজ ধরা দেয়। যদিও শক্তি, সামর্থ, ফর্ম আর টুর্নামেন্টের অবস্থানের বিচারে তেমনটি আশা করাটা বোকামিই হবে।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হযবরল অবস্থা। অভাবের সংসারের মত যেন চাল থাকলে ডাল নেই, তেল থাকলে আবার নুন নেই। বাংলাদেশ দলের অবস্থা এমন যে ব্যাটিংটা একটু ভাল হলে বোলিং হচ্ছে পাড়ার বোলারের মত। আর ফিল্ডিং হচ্ছে হাতে মাখন লাগানোর মত। ব্যাটিংয়ে ওপেনিংয়ে কিছুটা ভাল করলে মিডল অর্ডারে থাকে না কিছুই। আবার বোলিংয়ে পেসাররা কিছুটা সমীহ আদায় করতে পারলে স্পিনাররা রান দেন অকাতরে। এমন ত্রিশংকু অবস্থা এখন বাংলাদেশের। কি নবীন, কি অভিজ্ঞ, কেউই পারছেন না নিজ নিজ জায়গা থেকে দলের জন্য ভূমিকা রাখতে। তাইতো এমন হতশ্রী অবস্থা দলের। মাঠ এবং মাঠের বাইরে যে দলের এমন অবস্থা খুব কমই দেখা গেছে । তারপরও প্রত্যাশা টাইগার সমর্থকদের। অন্তত শেষটা যদি রাঙানো যায়।