সরকারিভাবে চিহ্নিত ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা’ খাতে বেআইনিভাবে ধর্মঘট ডাকলে বা সমর্থন দিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে একটি আইন করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা আইন ২০২২’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। খবর বিডিনিউজের।
২০২১ সালের ৪ অক্টোবর মন্ত্রিসভা এ আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল। চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় প্রস্তাবটি এখন যাবে সংসদে। সেখানে পাস হলে তা গেজেট আকারে জারি করবে সরকার।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আইনটিতে ১৪টি ধারা আছে। ৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে সরকার কোন বিষয়গুলোকে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করবে। ৫ ধারায় বলা হয়েছে, কতিপয় চাকরিতে কর্মরতদের নির্দিষ্ট এলাকা ত্যাগ না করার ক্ষমতা, আর ৫ ধারায় বলা হয়েছে ধর্মঘট, লকডাউন বা লে-অফ নিষিদ্ধ করার কথা। অনেক সময় শিল্প প্রতিষ্ঠানে লে-অফ বা লক আউট করা হয়। সরকার যদি মনে করে এগুলো জাস্টিফায়েড না, তাহলে এগুলো নিষিদ্ধ করতে পারবে। সচিব বলেন, যে সেবাগুলোকে সরকার ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা’ মনে করবে, সেগুলোর নাম ঘোষণা করা যাবে। কয়েকটি সেবার নাম খসড়ায় বলেও দেওয়া হয়েছে, যেমন ডাক ও টেলিযোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ই-কমার্স, ইলেক্ট্রনিক ও ডিজিটাল সেবা। দ্বিতীয়ত, ডিজিটাল আর্থিক সেবা যেমন মোবাইল আর্থিক সেবা; বিদ্যুৎ উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন এবং এর সাথে যোগ করা হয়েছে গ্যাস ও কয়লা। এগুলো অত্যাবশ্যক সেবা। এগুলোর বিষয়ে যদি কোনো অচলাবস্থা তৈরি হয়, সেক্ষেত্রে সরকার ইন্টারফেয়ার করতে পারবে এবং যেভাবে নির্দেশ দেবে রাষ্ট্রীয় কল্যাণে, সেভাবে পরিচালিত হতে হবে। স্থল, জল, রেল ও আকাশপথের যাত্রী বা পণ্য সেবাও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বলে বিবেচিত হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এর বাইরেও সরকার মনে করলে যে কোনো সেবাকে অত্যবশ্যকীয় সেবা ঘোষণা করতে পারবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, যদি কেউ এ জাতীয় অপরাধ করে তাহলে সাধারণভাবে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে। আবার বেআইনি ধর্মঘট চলমান রাখার জন্য যদি সমর্থন দেয়, তাহলে ১ বছরের কারাদণ্ড ও অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা যাবে। অনেকগুলো অপরাধের কথা এখানে বলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের মালিক যদি বেআইনি লে-আউট চালু করে, সেক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ৬ মাস জেল ও অনূর্ধ্ব ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা দুটোই করা যাবে। কেউ যদি প্ররোচণা দেয়, তাহলে মূল অপরাধে যে শাস্তি সেই শাস্তিই পাবে। বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া যাবে যদি সরকারি কোনো অফিস হয়। যেমন কোনো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের এমডি যদি লে-অফ ঘোষণা করে, তাহলে এর বাইরেও ডিপার্টমেন্টাল প্রসিডিং হবে। সচিব বলেন, কিছু কিছু চাকরিতে কর্মরতদের সরকার নির্দেশ দিতে পারবে যে সরকারের নির্দেশ ছাড়া তারা দেশত্যাগ করতে পারবে না। এগুলো রুলে ডিটেইল বলা হবে।