অটোমেশনের আওতায় চট্টগ্রাম ওয়াসা

আগামী মাসে চান্দগাঁওয়ে বসানো হচ্ছে ৩ হাজার ডিজিটাল মিটার

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৭ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম ওয়াসার দৈনিক পানি উৎপাদনের ক্ষমতা এখন প্রায় ৫০ কোটি লিটার। এরমধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশের মতো অপচয় হয় সিস্টেম লস বা নন-রেভেনিউ খাতে। বিপুল পানির অপচয় লিকেজের কারণে নাকি অবৈধ উপায়ে তা বিক্রিও হয়, এ নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। দীর্ঘদিনের সংকট নিরসনে এবার বিলিং সিস্টেমকে অটোমেশন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন থেকে চট্টগ্রাম ওয়াসার বিলিং সিস্টেমে অটোমেশনে যাওয়ার কথা শুনা গেলেও এবার শেষ পর্যন্ত বাস্তবে পরিণত হতে যাচ্ছে। আগামী মাসে শুরু হচ্ছে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ।

পাইলট প্রকল্পের আওতায় আগামী মাসে প্রথমে নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় বসছে ৩ হাজার পিওর আল্ট্রাসনিক ডিজিটাল মিটার। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম আজাদীকে বলেন, ৩ হাজার স্মার্ট মিটার বসানোর জন্য বিদেশি একটি কোম্পানীকে ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়েছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে কাজ শুরু করবে তারা। প্রথমে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই তিন হাজার মিটার চান্দগাঁও এলাকায় বসানো হবে।

চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সাল থেকেই অটোমেশনের দিকে যাওয়ার চিন্তা করছিল চট্টগ্রাম ওয়াসা। শুরুতে অ্যানালগ ও ডিজিটার দুটি ডিভাইস সংযুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু ক্যাবল কাটা পড়লে গোলমাল হতে পারে সে জন্য বিলিং সিস্টেম পরিচালনা করতে সম্পূর্ণ ডিজিটাল ডিভাইস খুঁজছিল কর্তৃপক্ষ। ২০২০ সালের শুরুর দিকে লোরা গেটওয়ে ভিত্তিক ৫টি স্মার্ট মিটার পরীক্ষামূলকভাবে বসানো হয়। নগরীর লালখানবাজার এলাকার হাইলেভেল রোড ও বাঘঘোনায় বসানো হয় এসব পরীক্ষামূলক মিটার। এক বছরের ব্যবহারে মিটারের কার্যকারিতার সফলতা পেয়ে পাইলট প্রকল্প প্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গত বছরের ১১ জানুয়ারি ডিজিটাল মিটারের ব্যাপারে দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই শেষে বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) নমুনা মিটার পাঠিয়ে পরীক্ষা শেষে। নির্ধারিত মানের মিটার তৈরির জন্য সময় দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ২০২২ সাল চলে যায়। চলতি বছরের আগামী এক মাসের মধ্যে ৩ হাজার সংযোগে স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হবে।

শুরুতে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের বিলের হিসাব হবে এই ডিজিটাল মিটারে। এছাড়া, অনলাইনে বিল প্রদানের জন্য পেমেন্ট গেটওয়েও থাকবে ডিজিটাল এই সিস্টেমে। পাইলট প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সবগুলো সংযোগকে এর আওতাভুক্ত করা হবে বলে জানান প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম।

২০২০ সালে চট্টগ্রাম ওয়াসার এক তদন্তে উঠে আসে, লিকেজ সমস্যার কারণে উৎপাদিত পানির ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ অপচয় হয়। বর্তমানে নগরীর ৮০ ভাগ এলাকায় পানি সরবরাহ করতে পারে সংস্থাটি। পানির অপচয় রোধ করা গেলে নগরীর ৯০ থেকে ১০০ ভাগ এলাকায় পানি সরবরাহ করা সক্ষম হবে বলে মত দিয়েছেন ওয়াসার সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘আল্লাহ হাফেজ’ স্ট্যাটাস দিয়ে হোটেল ম্যানেজারের আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধরাষ্ট্রের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে এই আন্দোলন : খসরু