অচল-সচলের গ্যাঁড়াকলে বন্দি ম্যামোগ্রাফি মেশিন

স্থাপনের পর ৬ বছরের মধ্যে ৪ বছরই অচল স্তনের রোগ নির্ণয়ের মেশিনটি নষ্ট থাকায় সেবা বঞ্চিত রোগীরা

জাহেদুল কবির | বৃহস্পতিবার , ১৫ আগস্ট, ২০২৪ at ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগে নারীর স্তনের টিউমার ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের ম্যামোগ্রাফি মেশিন স্থাপিত হয় ২০১৮ সালের পহেলা আগস্টে। কোটি টাকা মূল্যের মেশিনটি ৩ বছর ওয়ারেন্টি সময়ের মধ্যে চারবার নষ্ট হয়ে যায়। গতকাল পর্যন্ত এই ছয় বছরের মধ্যে মেশিনটি বন্ধ রয়েছে ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে। চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ম্যামোগ্রাফি মেশিনটি মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেকবার চিঠি লিখলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।

রেডিওলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ওয়ারেন্টির সময়সীমা ৩ বছর থাকলেও ম্যামোগ্রাফি মেশিনটি সব মিলিয়ে সচল ছিল ১ বছর ১১ মাস ২৯ দিন। এছাড়া বর্তমানে ৪ বছর ২ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। প্রথম দফায় স্থাপনের ৫ মাস ২৬ দিন পরে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১ বছর ৫ মাস ১৪ দিন পর চালু হয়। তবে এবার চালু হওয়ার মাত্র ৩ মাস ২৭ দিন আবারও বিকল হয় মেশিনটি। তারপর বন্ধ ছিল ৬ মাস ২৩ দিন। চালু থাকে ৮ মাস ৬ দিন। বন্ধ থাকার ৪ মাস ৬ দিন পর চালু হলেও এবার স্থায়ীত্ব হয় আরো ৬ মাস। এরপর গত ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে মেশিনটি স্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত টানা ১ বছর ৮ মাসধরে বিকল পড়ে আছে ম্যামোগ্রাফি মেশিন।

রেডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, নারীর স্তনের রোগ নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ ম্যামোগ্রাফি মেশিনটি বর্তমানে দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। আসলে মেশিনটি স্থাপনের পর থেকে ঘন ঘন যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এতে রোগীরাও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়। মেশিনটি যখন স্থাপিত হয় তখন ফিল্ম সংকটের কারণে যথা সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে চালু হলেও বারবার দেখা দেয় যান্ত্রিক ত্রুটি।

জানা গেছে, রেডিওলজি বিভাগে সিঙ্গল (একটি) স্তনের ম্যামোগ্রাফ পরীক্ষা ৪০০ টাকা এবং ডাবল (দুটি) স্তনের পরীক্ষা ফি নিতো ৮০০ টাকা। তবে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে এই ফি প্রায় চারগুণ নিয়ে থাকে। জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদার দৈনিক আজাদীকে বলেন, ম্যামোগ্রাফি মেশিনটি চালু থাকলে গরীব রোগীরা কম টাকায় সেবা পেতেন। মেশিনটির ৩ বছরের ওয়ারেন্টি সময়সীমা থাকলেও সচল ছিল ২ বছরেরও কম সময়। তাই রোগীরাও প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ম্যামোগ্রাফি মেশিনের বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেকবার চিঠি লিখা হয়েছে। এখন যেহতু নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। আমরা নতুন করে আবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরে থানা থেকে লুট হওয়া ৩৫ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধহত্যার বিচার না হলে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে না