অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে ৯ দফা নির্দেশনা

মোরশেদ তালুকদার | বৃহস্পতিবার , ২০ এপ্রিল, ২০২৩ at ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি বড় অগ্নিকাণ্ডের পর ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধ এবং সমসাময়িক বিষয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতে চট্টগ্রামসহ দেশের সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভাগুলোর জন্য ৯ দফা নির্দেশনা ঠিক করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, গত ১৭ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে একটি সভা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। এতে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অগ্নি দুর্ঘটনা পর্যালোচনা করা হয়। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নানা সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সিটি কর্পোরেশনগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পৌরসভাগুলোর মেয়র বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার এমন নির্দেশনা সংক্রান্ত দাপ্তরিক পত্র পেয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এতে নির্দেশনাগুলো জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর করতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে (চসিক) দাপ্তরিক চিঠিও দিয়েছে মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম জানান, নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নে গৃহীত সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ বা কার্যপদ্ধতি মন্ত্রণালয়কে অবিলম্বে অবহিত করতে হবে। কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়নে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সকল সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

চসিককে দেয়া নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছেসিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত মার্কেটসমূহে সংশ্লিষ্ট মার্কেট ব্যবস্থাপনা কমিটির তত্ত্বাবধানে দিনে ও রাতে স্ব স্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার অথবা নিশ্চিত করা। যে সকল মার্কেটে সিসি ক্যামেরা বিদ্যমান রয়েছে তা সচল রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং যে সকল মার্কেটে সিসি ক্যামেরা নেই সেখানে সিসি ক্যামেরা লাগানো নিশ্চিত করা। সিসি ক্যামেরার তথ্য সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে প্রয়োজনে শেয়ার করার নির্দেশনা দেয়া হয়।

এছাড়া যে সকল মার্কেটে জায়গার অপ্রতুলতা রয়েছে কিন্তু লোকসমাগম বেশি হয় সে সকল মার্কেটে অগ্নি প্রতিরোধে ‘স্মোক ডিটেক্টর’ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা। মার্কেটসমূহের বিদ্যুৎ ও গ্যাসসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সংযোগ সঠিক ও নিরাপদ আছে কী না তা যাচাই করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সার্টিফিকেশন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

যে সকল মার্কেটের দোকান অথবা গোডাউনে রাসায়নিক দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ রয়েছে অথবা রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা রয়েছে সেগুলো দ্রুত অন্যত্র নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সকল মার্কেটে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র সচল রাখা এবং পর্যাপ্ত ওয়াটার বা ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। মার্কেটসমূহে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের চলাচল নিশ্চিত রাখতে হবে। যে সকল মার্কেটে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বিদ্যমান আছে তা যাতে পর্যাপ্ত, কার্যকর ও সচল থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়।

অগ্নি দুর্ঘটনার বাইরে আসন্ন ঈদুল ফিতরকে ঘিরেও কয়েকটি নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে বলা হয়, প্রত্যেক ঈদ জামায়াতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। ঈদের সময় সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন সে জন্য সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন বা ব্যবস্থাপনাধীন সড়কসমূহ প্রয়োজনীয় মেরামত বা সংস্কার করে যাতায়াত ব্যবস্থা সচল রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নগরীর বাকলিয়ার রাজখালীতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একটি হিমাগারে আগুন লাগে। এর আগে গত মাসে সীতাকুণ্ডে তুলার গুদামে আগুন লাগে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ছোটবড় অনেক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এছাড়া ঢাকার বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেটে চলতি মাসে আগুন লাগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধরেমিট্যান্সে চট্টগ্রামসহ শীর্ষে ৪ জেলা