অগ্নিঝুঁকির জহুর হকার্স মার্কেটে যা দেখল মোবাইল কোর্ট

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ

নগরীর জহুর হকার্স মার্কেটে অগ্নিঝুঁকি কাটছে না। ঝুঁকি এড়াতে ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া সুপারিশও বাস্তবায়ন করছে না মার্কেট কর্তৃপক্ষ। গতকাল মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় গিয়ে এই চিত্র দেখতে পান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম ও জামশেদ আলম রানা।

সর্বশেষ গত ১১ মার্চ জহুর হকার্স মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হয়। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর আগুনে অনেক দোকান পুড়ে যায়। এতেও ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, হকার্স মার্কেটের দুর্ঘটনা এড়াতে তদন্ত পরবর্তী বেশ কিছু সুপারিশ করে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অবিলম্বে ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণ করা। কিন্তু ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণের দৃশ্যমান অগ্রগতি এখনো হয়নি। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হচ্ছে, এ সংক্রান্

এনওসি পাননি তারা। ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণের জন্য জায়গা একটি ফ্যাক্ট উল্লেখ করে ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন ও ওয়াসার সাথে যোগাযোগ করে কিভাবে কী করা যায় সে বিষয়ে তাদের মধ্যে কোনো চেষ্টা দেখতে পাইনি। সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জায়গা আদায় করে নিয়ে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণ করতে হবে। অথবা পর্যাপ্ত পানির সোর্স বের করতে হবে।

চট্টগ্রাম জেলায় অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও মৃত্যু এড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের নির্দেশনায় গতকাল দুপুর ১টা থেকে বিকাল পর্যন্ত কোতোয়ালী ও আগ্রাবাদ এলাকায় চারজন ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। এ সময় অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন, ২০০৩ প্রতিপালনে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট, কেমিক্যাল ও পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের গুদামকে সতর্ক করা হয়।

জহুর হকার্স মার্কেটের মহল মার্কেট, সিনেমা প্যালেস প্রান্ত থেকে শুরু করে নিউ মার্কেট প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ১২শ ঝুঁকিপূর্ণ দোকান রয়েছে উল্লেখ করে ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জহুর হকার্স মার্কেটের ঝুঁকিপূর্ণ এসব দোকানে ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নেই। পর্যাপ্ত ফায়ার এঙটিংগুইসারও (অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র) নেই। এ বিষয়ে মার্কেট কমিটিকে আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিটি দোকানে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জহুর হকার্স মার্কেটের বৈদ্যুতিক লাইনগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মার্কেট কমিটিকে ফায়ার সার্ভিস ও পিডিবির সাথে সমন্বয় করে অবিলম্বে বৈদ্যুতিক লাইনগুলোকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে হকার্স মার্কেটের ফায়ার এসেম্বলি এরিয়াতে পার্কিং এরিয়া তৈরি করা হয়েছে; যার কারণে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে নন্দনকানন ফায়ার স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী ও ফায়ার ইন্সপেক্টর শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, একই সময়ে আগ্রাবাদ ও পতেঙ্গায় অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। তিনি ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ফায়ার সেফটি প্ল্যান না থাকায় ২ লাখ টাকা এবং লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় টেক সোডাইস কর্পোরেশনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচীন থেকে আসা ৪ জনের কোভিড শনাক্ত
পরবর্তী নিবন্ধজনগণের উন্নত জীবনের জন্যই কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী