আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেবরা কিছু ইতিহাস নিয়ে কথা বলেছেন। ওনারা বলছেন যে, ৭ই মার্চের ভাষণ অস্বীকার করার উপায় নেই। অনেকে বলেছেন যে এতদিন পরে তাদের বোধদয় হয়েছে। কিন্তু এই মির্জা ফখরুল সাহেবকে জিজ্ঞেস করি, আপনাদের এটা বোধদয় না-কী আবারো কূটচালের কথা বলছেন। গতকাল সোমবার বিকেলে চকরিয়া সরকারি কলেজ মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আর আগে তিনি স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ কর্ণার’ উদ্বোধন করেন। হানিফ বলেন, ৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর আপনার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছিলেন। ওনি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেই এই বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিলেন। যে ভাষণ ছিল স্বাধীনতার ডাক, স্বাধীনতার ঘোষণা সেটাকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। এমনকি ঢাকা, কুষ্টিয়া, রংপুর, দিনাজপুরসহ সারাদেশে ৭ই মার্চের ভাষণ বাজাতে দেওয়া হয় নাই। মাইক ভেঙে দিয়েছে, হামলা করেছে। মানুষের জন্য রান্না করা খাবার ফেলে দিয়েছে টেনে। এতটাই প্রতিহিংসা পরায়ণ ছিল। মির্জা ফখরুল সাহেব আজকে বলছেন ৭ই মার্চের ভাষণ অস্বীকার করার উপায় নেই। আপনারা অস্বীকার করা না করা এতে জাতির কিছুই যায় আসে না। কারণ এই ভাষণ ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ লাইব্রেরিতে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর মধ্যে একটি ভাষণ হিসেবে রূপান্তর হয়েছে, দলিল হয়ে রয়েছে জাতিসংঘে। সেই জায়গায় আপনি ৭ই মার্চের ভাষণ স্বীকার করেন কী না করেন এতে কিছুই যায় আসে না।
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জাফর আলম এমপি। চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ও প্রচার সম্পাদক আবু মুছার যৌথ সঞ্চালনায় জনসভায় আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কুষ্টিয়ার সাংসদ সেলিম আলতাজ জর্জ, কঙবাজারের সাংসদ যথাক্রমে সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক, কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি, সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, লায়ন কমরুদ্দীন আহমদ, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, চকরিয়া পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরী, এটিএম জিয়াউদ্দিন চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা, আবুল কাশেম প্রমূখ।
হানিফ আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ২৬ তারিখে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রামের সে সময়ের জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছেন প্রথম বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। এর পরে কায়কোবাদ এবং কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের কর্মচারী বিল্লাল হোসেন ঘোষণা পাঠ করেছেন একাধিকবার। ২৭ তারিখ বিকেলে জিয়াউর রহমান এসে কালুরঘাটে ঘোষণা পাঠ করেছেন, তখন আওয়ামী লীগের একজন তাকে দিয়ে পাঠ করিয়েছেন এই কারণে যে সামরিক বাহিনীতে যেসব বাঙালি অফিসার, সৈন্যরা আছেন তারা যেন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন সেই কারণে। যদি কালুরঘাটের বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করার পরেই জিয়া স্বাধীনতার মহানায়ক হতে চান, তাহলে জিয়াউর রহমান নয় তার আগেই হবে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সেইসময়ের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান। ইতিহাস বিকৃতি করেছেন অনেক, ইতিহাস বিকৃতি করার আর সুযোগ নেই।