৬ মাস পর নারী ম্যাজিস্ট্রেট পেল মহানগর ম্যাজিস্ট্রেসি

নির্যাতিত নারীর জবানবন্দি রেকর্ডে স্বাভাবিকতা ফিরছে

হাবীবুর রহমান | বুধবার , ২৫ অক্টোবর, ২০২৩ at ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ

পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিতে সংকোচ বোধ করেন নির্যাতিত নারী। কিন্তু গত ছয় মাস ধরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসিতে পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেই নির্যাতিত নারী ঘটনার বর্ণনা তথা জবানবন্দি দিয়ে আসছেন। নারী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় বাধ্য হয়ে চলছিল এই ব্যবস্থা। ফলে তৈরি হয় অস্বাভাবিকতা। গত সপ্তাহে মেট্রোপলিটন

ম্যাজিস্ট্রেসিতে দুইজন নারী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। চলতি সপ্তাহে তাদের কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এরমধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের অস্বাভাবিকতা দূর হচ্ছে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসিতে।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুলাই নির্যাতিত নারীর জবানবন্দি নিচ্ছেন পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেট শিরোনামে দৈনিক আজাদীতে সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি আদালত সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে উচ্চ আদালতের নজরে আসে। এরই প্রেক্ষিতে দুই নারী ম্যাজিস্ট্রেটকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসিতে নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আইনজীবীরা বলছেন, নারী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ হওয়ায় নির্যাতিত নারীর জবানবন্দি রেকর্ড কার্যক্রমে স্বাভাবিকতা ফিরছে। নির্যাতিত নারী তার মনের সব কথা ঘটনার বর্ণনায় বলতে পারবেন। কোনও সংকোচ থাকবে না। পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নির্যাতিত নারী মন খুলে সব বলতে পারেন না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহানগর বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসিতে নির্যাতিত নারীর জবানবন্দি রেকর্ড কার্যক্রমে গত ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আদালতসূত্র জানায়, গত ১৭ আগস্ট দুজন নারী ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিভাগ বিভাগ। তারা হলেন, শরীয়তপুরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুমানা আক্তার ও চাঁদপুরের সহকারী জজ নুসরাত জাহান জিনিয়া। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন আজাদীকে বলেন, নিয়োগ পাওয়া দুই নারী ম্যাজিস্ট্রেট শীঘ্রই যোগদান করবেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী আজাদীকে বলেন, নারী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় নির্যাতিত নারীর জবানবন্দি রেকর্ড কার্যক্রমে অস্বাভাবিকতা শুরু হয়। যেটা এখনো চলছে। তবে দুজন নারী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ হওয়ায় সেটি আর থাকছে না। স্বাভাবিকতা ফিরছে নির্যাতিত নারীর জবানবন্দি রেকর্ড কার্যক্রমে।

তিনি বলেন, পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নির্যাতিত নারী ঘটনার বর্ণনা দিতে ইতস্তত বোধ করেন। সহজে মনের কথা বলতে পারেন না। গত ছয় মাস আগে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসির একমাত্র নারী ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান বদলি হওয়ায় নির্যাতিত নারীর জবানবন্দি রেকর্ডে অস্বাভাবিকতা শুরু হয়। এরপর থেকে ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল উচ্চ আদালতের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে আসছিলেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, নির্যাতিত নারীর জবানবন্দি নারী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক রেকর্ড করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপতেঙ্গায় টানেল উৎসব আজ থেকে
পরবর্তী নিবন্ধঅনেক কিছু বলার আছে, কিন্তু এটা কথা বলার ঠিক সময় না : রিয়াদ