পটিয়া আল জামিয়া মাদরাসায় অচলাবস্থা নিরাপত্তাসহ একাধিক দাবি
পটিয়া প্রতিনিধি
পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামী জমিরিয়া মাদরাসার মহাপরিচালক নিয়ে দ্বিপক্ষীয় সংকটে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে ঘটে গেছে বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ঐতিহ্যবাহী মাদরাসাটিতে অধ্যয়নরত ৫ হাজার ছাত্রের নিয়মিত পড়াশোনা ও পরীক্ষা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
বিগত তিন মাসে ৫ দফা হামলায় ছাত্রদের মধ্যে আতংক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি দাওরা হাদিসের (মাস্টার্স) সমমান পরীক্ষা নিয়ে ছাত্ররা শংকায় পড়েছে। তাদের অভিযোগ বার বার হামলা হলেও প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উল্টো ছাত্রদের হয়রানি করছে। হামলার জন্য ছাত্ররা মাদরাসার মহাপরিচালক পদ থেকে অব্যহতি পাওয়া মাওলানা ওবায়দুল্লা হামযাকে দায়ী করছে। তাদের অভিযোগ মজলিশে শূরা কমিটির বৈঠক করতে না দেওয়ায় সংকট লেগেই আছে। গত শনিবার মাদরাসা মিলনায়তনে মাদরাসা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ ধরনের অভিযোগ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্র–সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ আরিফ, সাধারণ সম্পাদক কাসেম আল নাহিয়ান, মোহাম্মদ শরীফ, আবদুল্লাহ, আবরার হোসেন ইসমাইল, সায়েম প্রমুখ। তারা অভিযোগ করে বলেন, গত ২৮ জানুয়ারি মাদরাসায় সন্ত্রাসী হামলায় তাদের ৩০ জন ছাত্র আহত হয়েছে। এরমধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। এদের মধ্যে আরজ (২১), খালেদ (২৩) পঙ্গু অবস্থায় আছে। এ ঘটনায় পটিয়া থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ এখনও কোনো মামলা রেকর্ড করেনি। নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ইত্তেহাদুল মাদরিসের পরীক্ষা। বার বার হামলার কারণে ছাত্ররা ভালভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছে না। সন্ত্রাসীরা দেড়শ ছাত্র–শিক্ষককে টার্গেট করেছে, তাদের হত্যা করা ওয়াজিব বলে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছে। সন্ত্রাসীরা পুনরায় মাদরাসায় হামলার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাছাড়া মাদরাসার বাইরে বের হলে ওবায়দুল্লাহ হামযার অনুসারী সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের উস্কানি ও হুমকি দেয়।
গত ২৭ জানুয়ারি হেফাজত ইসলাম আমির আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী ও হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা খলিল আহমদ কাসেমী মাদরাসায় কবর জিয়ারতে এসে পুলিশের কাছে নাজেহাল হন।
থানার ওসি জসিম উদ্দীন একদল পুলিশ নিয়ে মাদরাসায় ঢুকে ওই দুই আলেমকে মাদরাসা থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় পুলিশ বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ ছাত্রদের। সন্ত্রাসীরা কিরিচ দিয়ে বোমা,
ককটেল, মার্বেল, তীর, ধনুক নিয়ে মাদরাসায় হামলা করে। ছাত্র নেতৃবৃন্দ বলেন, এলাকার একজন শিল্পপতি মাওলানা ওবাইদুল হামযাকে পুনর্বহালের চেষ্টা করছেন। ফলে হামলা হলেও সন্ত্রাসীরা আইনের আওতায় আসছে না। এ পরিস্থিতির উত্তরণ না হলে ভবিষ্যতে মাদরাসায় হামলা–সংঘর্ষে লাশ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ছাত্রবৃন্দ মাওলানা ওবাইদুল্লা হামযাসহ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, মজলিশে শূরার বৈঠকে সহযোগিতাসহ ছাত্রদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে পটিয়া থানার ওসি জসিম উদ্দীন জানান, আলেমদের বের করে দেওয়া হয়নি। দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে নিরাপত্তার কথা বলা হয়। ঘটনার ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলেও পরে তারা আদালতে মামলা করেছে।