নতুন করে আরো সাড়ে পাঁচশর বেশি (৫৫৭টি) পদ সৃজন চায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) কর্তৃপক্ষ। কলেজের পক্ষ থেকে নতুন পদ সৃজনের প্রস্তাবনা সম্বলিত একটি চিঠি সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আকতার আজাদীকে বলেন, সম্প্রতি চমেক হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ২২০০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মেডিকেল কলেজের জনবলেও সমন্বয় প্রয়োজন। তাছাড়া এখন দিন দিন ডিপার্টমেন্টের সংখ্যাও বাড়ছে। আগে সবমিলিয়ে ৪০/৫০টি ডিপার্টমেন্ট থাকলেও বর্তমানে এ সংখ্যা ৮০টির বেশি। সবমিলিয়ে শিক্ষক-চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। অপরিহার্যতা বিবেচনায় নিয়েই নতুন করে পদ সৃজনের জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি। প্রস্তাবনায় সবমিলিয়ে নতুন করে সাড়ে পাঁচশর মতো পদ চাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হয়ে প্রস্তাবনাটি মন্ত্রণালয়ে যাবে বলেও জানান চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আকতার।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর চমেক অধ্যক্ষের স্বাক্ষরে পাঠানো প্রস্তাবনায় দেখা যায়, বর্তমানে চিকিৎসকসহ সবমিলিয়ে ৫৭৩টি পদ রয়েছে মেডিকেল কলেজে। এর মাঝে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৩৬৬টি। আর কর্মকর্তা-কর্মচারী পর্যায়ে পদ সংখ্যা ২০৩টি। এর বাইরে আউটসোর্সিংয়ে ৪ জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। নতুন প্রস্তাবনায় চিকিৎসকের আরো ৪১৭টি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৮৫টি পদ চাওয়া হয়েছে। এছাড়া আউটসোর্সিংয়ে ৪৯ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং মর্গের জন্য ৬টি ডোমের পদ প্রস্তাব করা হয়েছে। সবমিলিয়ে নতুন করে ৫৫৭টি পদ সৃজনের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চমেক-এর উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. হাফিজুল ইসলাম।
চমেক প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, মেডিকেল কলেজে বর্তমানে অধ্যাপকের ৫২টি, সহযোগী অধ্যাপকের ৮২টি, সহকারী অধ্যাপকের ১৪২টি, কিউরেটর ২টি, লেকচারার ৭৫টি এবং মেডিকেল অফিসারের ৬টি পদ রয়েছে। আর নতুন করে চিকিৎসকদের প্রস্তাবিত পদের মধ্যে ৪২টি অধ্যাপক, ১১৪টি সহযোগী অধ্যাপক, ১৮৬টি সহকারী অধ্যাপক, কিউরেটর ২টি, লেকচারার (এমও) ৭২টি এবং মেডিকেল অফিসারের ১টি পদ চাওয়া হয়েছে। এর বাইরে অন্যান্য জনবলের মধ্যে সিনিয়র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ৬টি, অফিস সহায়ক ৪২টি এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নতুন করে ১৩টি পদ সৃজনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
চমেক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৭ সালে মাত্র তিনটি বিভাগ (এনাটমি, ফিজিওলজি ও বায়োকেমিস্ট্রি) নিয়ে চমেকের যাত্রা শুরু। যাত্রালগ্নে ২৬ জন শিক্ষক এবং ৭৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে শিক্ষা কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে এমবিবিএস, বিডিএস, এমডি/এমএস, এমফিল, এমপিএইচ, এফসিপিএসসহ মোট ৩৬টি কোর্স চালু আছে। এসব কোর্সে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৭০০। প্রতি শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ২৩০ জন এবং বিডিএস কোর্সে ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এছাড়া পোস্ট গ্রাজুয়েট কোর্সগুলোতে আরো ১৭১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। স্পেশালিটি ও সাব-স্পেশালিটি নিয়ে সবমিলিয়ে ৮৮টি বিভাগ চালু আছে।
চমেক কর্তৃপক্ষ বলছে, অপরিহার্যতা বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যমান ৫৭৩টি পদের সাথে নতুন করে আরো ৫৫৭টি পদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত পদগুলো অনুমোদন পেলে কলেজের সবমিলিয়ে পদ সংখ্যা ১ হাজার ১৩০টিতে দাঁড়াবে।