মোহাম্মদ সুমন (৩৫) নামের এক রিকশা চালক অভিনব কায়দায় ৪৫ লাখ টাকার মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট (প্রতিস্থাপন যোগ্য হার্টের রিং ও স্ট্যান্ট) নিয়ে ২৪ অক্টোবর উধাও হয়। পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজলেও সন্ধান মিলছিল না। তবে ঘটনাস্থল নগরীর কোতোয়ালী থানার কাজীর দেউড়ি এলাকার ২৫টি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ধরা হয় এ চোরকে। গ্রেপ্তার সুমন মাদারীপুর জেলার নয়াকান্তি বাজেদপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আক্কাস বেপারির ছেলে। সে চট্টগ্রামে ভাড়ায় রিকশা চালায়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কার্ডিয়াক কেয়ার নামের একটি মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট সাপ্লাই প্রতিষ্ঠান গত ২৪ অক্টোবর তাদের ঢাকা অফিস থেকে ৫৮ টি প্রতিস্থাপন যোগ্য হার্টের রিং কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে নগরীর কাজির দেউড়ির এস এ পরিবহনে পাঠায়। তাদের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ও সহকারী মার্কেটিং অফিসার কাজী মোহাম্মদ গোলাম মোস্তাফা (৩৯) তা গ্রহণ করেন। যার মূল্য ৪৫ লাখ টাকা। ওইদিন তিনি এস এ পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিসের অফিসে এসে ২টি কার্টনে করে পাঠানো পণ্যগুলো গ্রহণ করেন। কাজীর দেউড়ির এস এ পরিবহন অফিসের সামনে রাস্তায় এসে সিএসসিআর মেডিকেল সেন্টারে যাওয়ার জন্য তিনি একটি রিকশা ভাড়া করেন। রিকশা যোগে তিনি চকবাজার থানাধীন চট্টেশ্বরী মোড়ে আসলে রিকশা চালক হঠাৎ বলেন, তার রিকশাটি বিকল হয়ে গেছে। রিকশা ঠিক করার জন্য যাত্রীকে রিকশা থেকে নামতে হবে।
গোলাম মোস্তফা সরল বিশ্বাসে রিকশা থেকে নেমে রাস্তার একপাশে যাওয়ার সময় হঠাৎ একজন ব্যক্তি অযাচিত ভাবে তার সাথে ধাক্কা লাগায়। ওই লোক নিজের মোবাইলটি রাস্তায় ফেলে দিয়ে অযাচিত তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হয়। গোলাম মোস্তফা কিছু বুঝে ওঠার আগে দেখতে পান তাকে বহনকারী রিকশাটি উধাও।
গোলাম মোস্তফা হতভম্ব হয়ে অন্য একটি রিকশা যোগে পণ্যগুলো ফিরে পাওয়ার আশায় প্রথমে সিএসসিআর যান। পরে সেখান থেকে পুণরায় কাজির দেউড়ি এস এ পরিবহন অফিসে আসেন। ততক্ষণে তিনি বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। পরে তিনি ছুটে আসেন চকবাজার থানায়। সেখানে মামলা (নং-০৯) দায়ের করেন। এতে ৪০৭/৪২০/৩৪ পেনাল কোড ধারায় অভিযোগ করা হয়। চকবাজার থানার ওসি মনজুর কাদের মজুমদার জানান, মামলার পর তারা ঘটনাস্থলের আশেপাশের প্রায় ২৫ টি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে আসামিদের শনাক্ত করেন। তিনি জানান, একটানা ৪৮ ঘণ্টার নিরলস প্রচেষ্টায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার মূল হোতা মোঃ সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চট্টেশ্বরী মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার তথ্যে, কোতোয়ালী থানাধীন আটমার্চিং মোড়স্থ ফোর স্টার ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে আত্মসাৎকৃত সকল মালামাল উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় ব্যবহৃত রিকশাটি চকবাজার থানাধীন চট্টেশ্বরী মোড়স্থ গ্রামীণ জুয়েলার্সের সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন তার সঙ্গে আরও ৩ জন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।