আফ্রিকা ছাড়াও বিশ্বজুড়ে এখন অন্তত ৩০টি দেশে ৫৫০ জনের বেশি মানুষের মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হওয়ার খবর জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির কর্মকর্তা রোসামুদ লিউইস গত মঙ্গলবার সিএনএন–কে বলেছিলেন, ডব্লিউএইচওর ছয়টি অঞ্চলের ৩০টি দেশে ৫৫০ জনের বেশি মানুষের মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হওয়া সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
রোগটির প্রাদুর্ভাব একই সময়ে একাধিক জায়গায় ঘটছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আমরা সত্যিই সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখছি। অপেক্ষাকৃত অল্প সময়ের মধ্যেই মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্ত হওয়ার সব ঘটনাই আমরা দেখতে পাচ্ছি। মাত্র কয়েকদিন, কয়েকসপ্তাহের ব্যবধানেই আমরা এটি হতে দেখছি। আমরা ৫শ’র বেশি জনকে এ রোগে আক্রান্ত হতে দেখছি। এটি ভিন্ন ধরনের ঘটনা। এরকমটি আগে হতে দেখা যায়নি।
ডব্লিউএইচও এর আগে গত ২৬ মে তে মাঙ্কিপক্সে শনাক্তের সর্বশেষ হিসাব দিয়ে বলেছিল, তারা ২৩ টি দেশে ২৫৭ জনের মাঙ্কিপক্স শনাক্তের খবর নিশ্চিত হয়েছে এবং প্রায় ১২০ জন মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা করছে। এর মাত্র দিন চারেকের মধ্যেই শনাক্তের সংখ্যা আরও বেড়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ধনী পশ্চিমা দেশে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ বাড়ার কারণে এ নিয়ে গবেষণাও জোরদার করছে দেশগুলো। এর সুফল যেন নিম্ন আয়ের দেশগুলোও পেতে পারে, তা নিশ্চিত করতে ধনী দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকেরা।
সাধারণত আফ্রিকার দেশগুলোতে দেখা দেওয়া মাঙ্কিপক্স এখন মূলত ইউরোপের দেশগুলোতে শনাক্ত হতে শুরু করায় উদ্বেগ বাড়ছে। আফ্রিকা ভ্রমণ করেননি, এমন অনেকের এই রোগ শনাক্ত হওয়ায় ঠিক কী কারণে রোগটি ছড়াচ্ছে তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন গবেষকরা। আফ্রিকার দেশগুলোতে ১৯৭০ সালে প্রথম এ ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে মাঝেমধ্যেই মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে।
মাঙ্কিপক্স নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ডব্লিউএইচও আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে ‘নাইজেরিয়া সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল’ এর মহাপরিচালক বলেছেন, নাইজেরিয়ায় ২০১৭ সাল থেকে মাঙ্কিপক্স চলে আসছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ৬০০ জনকে এ রোগে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে এবং প্রায় ২৫০ রোগী শনাক্ত হয়েছে।
ওদিকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে মাঙ্কিপক্সের বিস্তার মোকাবেলায় শনাক্তকরণ পদ্ধতি ও টিকা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বায়োফার্মাসিউটিক্যাল খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবর্তনশীল আবহাওয়া পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে খাবার অনুসন্ধানের অভ্যাসসহ প্রাণী ও মানুষ তাদের আচরণ পরিবর্তন করছে। এর ফলে নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে একসময় যে রোগজীবাণুগুলো সীমাবদ্ধ ছিল তা আরও দূর–দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। তাছাড়া, মানুষ ও সংবেদনশীল প্রাণী প্রজাতির মধ্যে অনেক রোগ ফিরেও আসছে।