৩০ জুনের মধ্যেই বাঁধমুক্ত হবে খাল

পলিথিনের বিরুদ্ধে শীঘ্রই সাঁড়াশি অভিযান জলাবদ্ধতা নিয়ে নগর ভবনে বৈঠক

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৫ জুন, ২০২১ at ৬:২০ পূর্বাহ্ণ

জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের আওতায় নগরের বিভিন্ন খালে দেয়া বাঁধগুলো চলতি মাসেই অপসারণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থাৎ আগামী ৩০ জুনের মধ্যেই বাঁধমুক্ত হবে খাল। জলাবদ্ধতা নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল সিটি কর্পোরেশেনের টাইগারপাসস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সভা হয়েছে। সভায় পলিথিনের বিরুদ্ধে শীঘ্রই সিটি কর্পোরেশন ও সিডিএসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনারও সিদ্ধান্ত হয়।
সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম. জহিরুল আলম দোভাষ বক্তব্য রাখেন। সিটি মেয়র বলেন, মেগা প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে আশা করা যায়। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের কাজ ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখনো খালে অস্থায়ী বাঁধ আছে। সিডিএ কর্তৃপক্ষ তা সরাচ্ছে। তবে জলাবদ্ধতা যাতে এবারের বর্ষায় নাগরিক দুর্ভোগ না বাড়ায় তা নিয়ে সব সংস্থার সুচিন্তিত মতামত প্রয়োজন। মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করতে হবে সব সংস্থাকে। না হয় প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ দেয়া মেগা প্রকল্পের টাকার অপচয় হবে, যা কাম্য নয়। মেয়র বলেন, জলবদ্ধতার জন্য কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিং না হওয়া ও নদী খালে পলিথিন ফেলাও কম দায়ী না। এসময় যেখানে পলিথিনের ব্যবহার রোধে চসিকের উদ্যোগে অভিযান শুরুরও ঘোষণা দেন। তিনি আর.এস ও সি.এস শীট অনুযায়ী নতুন খাল খননের পাশাপাশি বিলীন এবং দখল হওয়া খাল পুনঃরুদ্ধারে উদ্যোগ নেয়ার পক্ষে মত দেন।
সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, আমরা সব সেবাসংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করতে চাই। একে অপরকে দোষারোপ করলে কাজ হবে না। খালে কাজের জন্য যে বাঁধ দেয়া হয়েছে তা চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে অপসারণ হবে।
সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, মাস্টার প্ল্যানের পরিকল্পনা নেয়ার ক্ষেত্রে কর্পোরেশনের মতামত না নেয়া হলে তা দ্রুত নিতে হবে। না হয় জলাবদ্ধতা নিরসনের মেগা প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন না হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে।
৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনসট্রাকশন ব্রিগেডের প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর পঙ্কজ মল্লিক বলেন, বার বার সব সংবাদ মাধ্যমে মেগা প্রকল্প বলা হলেও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজে সিডিএ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি হয়েছে ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকায়। এর মধ্যে আমরা পেয়েছি ১ হাজার ৬ শত ৮২ কোটি টাকা। ৩৬টি খালের মধ্যে আমরা অর্ধেক খালের কাজ করেছি। বাকি অর্ধেক খালের কাজ এখনো বাকি। ড্রেনের কাজ করেছি মাত্র ২৬ কিলোমিটার কাজেই এখনি বেশি কিছু আশা করলে ভুল হবে।
চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, খাল খননের পাশাপাশি খালের দুই পাড়ে ২০ ফুটের রাস্তা নির্মাণ করতে হবে। যাতে খাল খননের পর খালের মাটি সহজে অপসারণ করা যায়। তিনি নগরীতে নতুন সড়ক সৃষ্টির প্রস্তাবও করেন।
সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, জলবদ্ধতা নিরসনে নির্মাণাধীন স্লুইচগেইট রক্ষণাবেক্ষণে চসিককে প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে। এতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরামর্শও নেয়া যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর বলেন, রেগুলেটর নির্মাণে আমরা এখনো ৬০ কোটি টাকার মধ্যে ৪০ কোটি টাকা পেয়েছি। আর স্লুইচ গেইট নির্মাণের পর যেহেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব চসিকের তাই আমরা যাবতীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করতে পারি। এ ব্যাপারে সিডিএ, কর্পোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে একটি ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠন করা যায়।
সভায় বক্তব্য রাখেন চসিক প্রধান কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. নুরুল্লাহ নুরী, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মাহমুদুল হোসেন খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কর্মকর্তা এস.এম মোস্তাইন হোসেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল বালিসহ ৬ জনের বিরদ্ধে দুদকের মামলা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ