বন্ধ ঘোষণার ২৭ দিন পর অবশেষে গতকাল (২৭ নভেম্বর) চমেকের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার ছাত্রীদের হোস্টেল খুলে দেয়া হয়। যদিও ছাত্রদের হোস্টেল বন্ধই রয়েছে। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনায় গত ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সাথে ওই দিন (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় চমেক কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা কার্যক্রম চালু হওয়ার প্রথম দিনই শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ফের মুখরিত হয়ে উঠেছে চমেক ক্যাম্পাস। অনেকটা স্বাভাবিক ভাবেই প্রথম দিনের ক্লাসসহ একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। ক্লাসে ফিরতে পেরে অনেকটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তারা।
খোলার প্রথম দিন শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাস ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার। কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা বা ঝামেলা হয়নি। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ভালো ছিল বলে জানান চমেক অধ্যক্ষ। প্রসঙ্গত, গত ২৯ ও ৩০ অক্টোবর চমেক হোস্টেল ও ক্যাম্পাসে সংঘটিত ছাত্রলীগের দুগ্রুপের মারামারির ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে চমেক কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার কমিটি তাদের প্রতিবেদন হস্তান্তর করে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েই পরদিন (মঙ্গলবার) একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক আহবান করেন চমেক অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার। সোমবার হস্তান্তর করা ওই প্রতিবেদনসহ আগের আরো দুটি তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিভিন্ন মেয়াদে ৩১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বহিষ্কৃত এসব শিক্ষার্থী সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মী। একই সাথে ২৭ নভেম্বর (শনিবার) থেকে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্তও নেয়া হয় মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ওই একাডেমিক কাউন্সিলের সভায়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল (শনিবার) থেকে চমেকের শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়েছে।
এদিকে, বহিস্কৃত শিক্ষার্থীরা নিজেদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে পারে বলে জানা গেছে। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা এ তথ্য জানিয়েছেন। যদিও গতকাল পর্যন্ত এ ধরণের কোন আবেদন আসেনি বলে জানিয়েছেন চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার।
মিছিল, সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা বহাল : পূর্বের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ক্যাম্পাসে সব ধরনের মিছিল, সভা-সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় মঙ্গলবারের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায়। অর্থাৎ এই সিদ্ধান্তের আওতায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মিছিল, সভা-সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন ও বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। একই সাথে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত চমেক হোস্টেল ও ক্যাম্পাস পুলিশ প্রশাসনের কাছে ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে যে কোনো পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ব্যতীত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে কোনো শিক্ষার্থীকে বা তাদের কক্ষে তল্লাশিসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।










