শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) আগামী ২৬ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। অবরোধের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে আগ্রাবাদ বিদ্যুৎ ভবনের সামনে, মাইলের মাথা এবং বড়পোল পোর্ট কানেক্টিং রোডের মুখ।
গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে স্কপের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কনভেনশনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার। সঞ্চালনা করেন স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান। প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও শ্রম বিশেষজ্ঞ সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ।
বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত, কেন্দ্রীয় স্কপ নেতা আব্দুল কাদের হাওলাদার, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, সাইফুজ্জামান বাদশা, আহসান হাবিব বুলবুল ও এএএম ফয়েজ হোসেন।
সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বিরাষ্ট্রীয়করণ, পাটকল ইজারা, সরকারি কলকারখানা বন্ধ এবং শ্রমিক অধিকারের বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে একটি জাতীয় ইশতেহার প্রয়োজন। তিনি ব্যবসায়ীদেরও বন্দর রক্ষার আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তাঁর মতে, শ্রমিকদের দায়িত্ব শুধু রাস্তায় নামা নয়, জাতীয় সম্পদ রক্ষায় ব্যবসায়ীদেরও সমান ভূমিকা রয়েছে। ২৬ নভেম্বরের কর্মসূচির পর ঢাকায় শ্রমিক–ব্যবসায়ী ঐক্যকে জোরদার করার জন্য যৌথ আলোচনার প্রস্তাব করেন তিনি এবং দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনে ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। কনভেনশন থেকে সর্বসম্মতিক্রমে চট্টগ্রাম বন্দরের লাভজনক স্থাপনা নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালসহ (এনসিটি) কোনো স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়ার উদ্যোগকে জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী, শ্রমিক ও বন্দরনির্ভর মানুষের জীবিকার জন্য হুমকি এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
কনভেনশন থেকে ঘোষণা করা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরসহ সব লাভজনক স্থাপনা ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং লালদিয়ার চর ও পানগাঁও টার্মিনাল সংক্রান্ত সব গোপন ও অস্বচ্ছ চুক্তি বাতিল করতে হবে। কনভেনশনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব কেবল নির্বাচন সম্পন্ন করা এবং ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের কাছে হস্তান্তর করা। দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নতুন চুক্তি করার নৈতিক বা সাংবিধানিক অধিকার এই সরকারের নেই। স্কপ সব শ্রমিক, কর্মচারী, নৌ বন্দর নির্ভর জনগণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার দেশপ্রেমিক নাগরিকদের শান্তিপূর্ণভাবে বন্দর অবরোধ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানায়।
ঘোষণা পাঠ করেন কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার। বন্দর এলাকায় নিষেধাজ্ঞা পুনরায় বাড়ানোতে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমাদের কর্মসূচি বানচাল করা যাবে না। বরং আরো কঠিন থেকে কঠিনতর কর্মসূচি দিয়ে আমরা বন্দর ইজারা দেওয়ার ষড়যন্ত্র রুখে দেব। তিনি গোপন চুক্তির মাধ্যমে লালদিয়ার চর এবং পানগাঁও ইজারা দেওয়ার সমালোচনা করেন।
তপন দত্ত বলেন, ২৬ নভেম্বরের অবরোধ কঠোর কর্মসূচির সূচনা, প্রয়োজনে ভবিষ্যতে শাটডাউন বা হরতালের মতো আরো কঠোর কর্মসূচিও দেওয়া হবে।
স্থানীয় স্কপ নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন মসিউদ্দৌলা, কাজী আনোয়ারুল হক, খোরশেদুল আলম, নুরুল আবসার তৌহিদ ও জাহিদ উদ্দিন শাহিন।












